খাদ্য ও পুষ্টিছাড়া মানুষের জীবন অকল্পনীয়
খাদ্য ছাড়া আমাদের জীবন ধারণ সম্ভব নয়। দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং চলাফেরা করার জন্য সবল, রোগমুক্ত ও সুস্থ শরীর প্রয়োজন। সুস্থ শরীর বজায় রাখার জন্য আমরা যা কিছু খেয়ে থাকি তা-ই খাদ্য।
খাদ্যের কাজ
শরীর গঠন ও বৃদ্ধিসাধন এবং ক্ষয়পূরণ, শরীরে তাপশক্তি ও কর্মক্ষমতা যোগানো, শরীর রোগমুক্ত রাখা এবং অসুস্থ শরীরকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করা ।
আরও পড়ুন
খাদ্য ও পুষ্টি
খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ
কাজভেদে খাদ্যকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
যেমনঃ
ক. শক্তিদায়ক খাদ্য
এ সব খাদ্যের প্রধান ভূমিকা হলো, শক্তি ও তাপ উৎপাদন করে শরীরকে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখা। শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকর্ম যেমনঃ শ্বাসপ্রশ্বাস ক্রিয়া, হৃৎপিন্ড ও অন্যান্য দেহ যন্ত্রের ক্রিয়া, পরিপাক ক্রিয়া, মলমূত্র নিষ্কাষণ ক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনে সকল কাজকর্ম সম্পাদনে শক্তি প্রয়োজন। যে সকল খাদ্য সামগ্রী হতে শক্তি পাওয়া যায় তা হলোঃ শস্য জাতীয় খাদ্য (যেমন চাল, গম, ভূট্টা, জোয়ার ইত্যাদি)
মূল জাতীয় খাদ্য (যেমন গোল আলু, মিষ্টি আলু, মেটে আলু, কাসাবা ইত্যাদি)
তেল বা চর্বি জাতীয় খাদ্য (যেমন সব রকমের তেল, ঘি, মাংসের চর্বি ইত্যাদি)
চিনি, গুড় ও মিষ্টি জাতীয় খাদ্য
খ. শরীর গঠন, বৃদ্ধিসাধন এবং ক্ষয়পূরণকারী খাদ্য
এ সকল খাদ্য মানবদেহে মূলত: শরীরের কাঠামো তৈরী বা শরীর গঠন, শরীরের বৃদ্ধি সাধন ও শরীরের ক্ষয় পূরণে কাজ করে থাকে। এসব খাদ্যের মধ্যে প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত:
ডিম
দুধ
মাছ
মাংস
এবং উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত:
সব রকমের ডাল
মটর শুঁটি
সীমের বীচি
কাঁঠালের বীচি
বাদাম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
গ. রোগ প্রতিরোধক খাদ্য
এ সব খাদ্যের প্রধান ভূমিকা হলো, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, নানা প্রকার রোগ-ব্যাধি কিংবা অসুস্থতা হতে শরীরকে রক্ষা করা। রোগ প্রতিরোধক সস্তা খাদ্যের মধ্যে রয়েছে :
রঙ্গিন শাকসব্জি
ফলমূল
খাদ্য উপাদানের শ্রেণী বিভাগ
খাদ্য উপাদানকে নিম্নের ৬টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে :
শ্বেতসার বা শর্করা ( উৎস- চাল, গম, ভুট্টা, চিড়া, মুড়ি, চিনি, গুড়, আলু ও মূল জাতীয় অন্যান্য খাদ্য)
আমিষ ( উৎস - মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, মটর শুঁটি, সীমের বীচি, কাঁঠালের বীচি, বাদাম ইত্যাদি)
স্নেহ জাতীয় খাদ্য (উৎস -তেল, ঘি, মাখন, চর্বি ইত্যাদি)
খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন (উৎস - রঙ্গিন শাক-সব্জি ও ফল, ডিম, দুধ, কলিজা ইত্যাদি)
খনিজ লবণ (উৎস - রঙ্গিন শাক-সব্জি ও ফল, ডিম, দুধ, কলিজা, মাংস, ছোট মাছ ইত্যাদি)
নিরাপদ পানি
খাদ্য উপাদানের কাজ, উৎস ও মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
খাদ্যের মুখ্য উপাদান
শ্বেতসার বা শর্করা
আমিষ
স্নেহ
খাদ্যের গৌণ উপাদান
খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন
খনিজ লবণ
নিরাপদ পানি
খাদ্যের মুখ্য উপাদান
শ্বেতসার বা শর্করা
কাজ
শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
তেল / চর্বি জাতীয় পদার্থ দহনে সাহায্য করে
আমিষের প্রধান কাজ করতে সহায়তা করে এবং
কাজ
শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
তেল / চর্বি জাতীয় পদার্থ দহনে সাহায্য করে
আমিষের প্রধান কাজ করতে সহায়তা করে এবং
উৎস
চাল, গম, ভুট্টা, চিনি, গুড়, মিষ্টি, আলু, মিষ্টি আলু, কচু ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী )
মোট প্রয়োজনীয় খাদ্য শক্তির শতকরা প্রায় ৫০-৬০ ভাগ
আমিষ
কাজ
দেহের গঠন ও বৃদ্ধি সাধন করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
শরীরে তাপ শক্তি সরবরাহ করে
শরীরে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে
উৎস
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, কলিজা
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন- সয়াবিন, কাঁঠালের বীচি, সীমের বীচি, ডাল, বাদাম, মটরশুঁটি ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী)
প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১ গ্রাম ( পূর্ণ বয়স্কদের জন্য ) প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ২-৩ গ্রাম ( ৪ বছরের শিশুর জন্য )
প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১.৭ গ্রাম ( ৪-১৮ বছর বয়স পর্যন্ত )
প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১.৫ গ্রাম ( গর্ভবতী ও প্রসূতীর জন্য )
কাজ
দেহে শক্তি সরবরাহ করে
দেহের ত্বককে মসৃণ রাখে
খাবার সুস্বাদু করে ও তেল বা চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন শরীরে কাজে লাগাতে সাহায্য করে
উৎস
প্রাণিজ উৎস যেমন-ঘি, মাখন, চর্বি
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, তিলের তেল, সূর্যমুখীর তেল, বাদাম, ডালডা, নারকেল (শুকনা )
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ (আহারোপযোগী)
প্রায় ৩৫-৪০ গ্রাম ( পূর্ণ বয়স্কের জন্য )
প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য দৈনিক ২-৩ গ্রাম ( ১ বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য )
খাদ্যের গৌণ উপাদান - খাদ্য প্রাণ বা ভিটামিন
ভিটামিন (তেল বা চর্বিতে দ্রবণীয়)
ভিটামিন-এ
কাজ
চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে
ত্বকের কোষকে ভালো রাখে ফলে ত্বক মসৃণ থাকে
শরীর গঠন এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
হাঁড় ও দাঁত তৈরীতে সহায়তা করে
সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
প্রজনন ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-ফিস লিভার ওয়েল, মাছের তেল, কলিজা, মাখন, ডিমের কুসুম, কিডনি, চর্বি
উদ্ভিজ্য উৎস যেমন-রঙিন শাকসবজি, ফল এবং ভুট্টা ও মিষ্টি আলু
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
প্রায় ৫০০০ আই ইউ* ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
প্রায় ৬০০০ আই ইউ ( গর্ভবতীর জন্য )
প্রায় ৮০০০ আই ইউ ( প্রসূতির জন্য )
প্রায় ২০০০-৪৫০০ আই ইউ ( ১-১২ বছর বয়স পর্যন্ত )
* আই ইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট)
ভিটামিন-ডি
কাজ
শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিপাকে সাহায্য করে
হাঁড় ও দাঁত গঠনে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস কাজে লাগাতে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছের তেল, ফিস লিভার ওয়েল, মাখন, ডিমের কুসুম, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার
প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সূর্যের আলো
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
২.৫ মাইক্রোগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য )
১০ মাইক্রোগ্রাম ( গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুর জন্য )
(উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-ডি নেই)
ভিটামিন-ই
কাজ এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে ভিটামিন-এ, ক্যারোটিন এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডকে জারিত হয়ে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করাসহ বন্ধ্যাত্ব নিবারণে সহায়তা করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-কডলিভার ওয়েল
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন- বাদাম,গম, যব, সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল এবং পামতেল
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
প্রায় ৫-১০ মিলিগ্রাম
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন
ভিটামিন-সি
কাজ
কোলাজেন নামক আমিষ তৈরী এবং রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করে
চর্বি ও আমিষ বিপাকে সাহায্য করে
রক্ত তৈরী করার জন্য লৌহ এবং তাম্রকে ব্যবহৃত করতে সাহায্য করে
চামড়া মসৃণ এবং উজ্জল রাখে
দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে
ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে
উৎস (আহারোপযোগী)
টক জাতীয় ফল যেমন - আমলকি, পেঁয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, লেবু, কামরাঙ্গা, কুল, আনারস। এছাড়া কাঁচামরিচ, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, সজনে পাতা, মূলাশাক ইত্যাদি কাঁচা খেলেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
২০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য )
৩০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
৫০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
৫০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ভিটামিন-বি২
কাজ
শরীরে শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে শক্তি উৎপাদন করে
চর্বি ও আমিষ থেকে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে
দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বি বিহীন মাংস, কলিজা, ডিম, দুধ, মাছ
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ঢেঁকি ছাঁটা সিদ্ধ চাল, গম, যব, ইস্ট, মটরশুঁটি ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১.৪ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
১.০ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
১.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১.৪ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
নায়াসিন
কাজ
শর্করা বিপাকে সাহায্য করে
শর্করা ও আমিষ থেকে দেহের চর্বি উৎপাদনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-গম, ডাল, বাদাম, তেল বীজ, ছোলা ও শাক-সবজি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১৮.২ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
১৩.২ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
১৫.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১৮.১ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ভিটামিন-বি১২
কাজ
কো-এনজাইম হিসেবে দেহে কাজ করে
রক্তের লোহিত কণিকার আকার স্বাভাবিক রাখে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-কলিজা, মগজ, হৃৎপিন্ড, কিডনি, মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, দুগ্ধজাত খাদ্য, ডিমের কুসুম ও গরুর কলিজা
(উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-বি১২ নেই)
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১.০ মাইক্রোগ্রাম (শিশুর জন্য)
২.০ মাইক্রোগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)
৩.০ মাইক্রোগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)
২.৫ মাইক্রোগ্রাম (প্রসূতির জন্য)
খনিজ লবণ
ক্যালসিয়াম
কাজ
ফসফরাসের সহযোগিতায় শরীরের কাঠামো, হাঁড় ও দাঁত গঠন এবং তা মজবুত করে
প্রতিটি জীব কোষ গঠনে এর প্রয়োজন
রক্ত জমাট বাঁধার প্রয়োজনীয় উপাদান
হৃৎপিন্ডের সংকোচন, প্রসারণ এবং হৃৎপিন্ডে স্পন্দনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-ছোট চিংড়ি, ছোট মাছের কাঁটা, নরম হাঁড়, দুধ ও দুধজাত খাবার
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ডাল, ঢেঁড়স, সজনে এবং সবুজ শাক যেমন-কচু শাক, পালং শাক ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
৪৫০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
৫০০-৬০০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য )
৬৫০ মিলিগ্রাম ( কিশোর-কিশোরীর জন্য )
১১০০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১১০০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ফসফরাস
কাজ
ক্যালসিয়ামের সাথে মিলিত হয়ে হাঁড় ও দাঁতের তন্তু তৈরী এবং তা মজবুত করে
শর্করা এবং চর্বি বিপাকে সাহায্য করে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে
কোষের নিউক্লিক এসিড ও সাইটোপ্লাজমের অপরিহার্য অংশ
উৎস ( আহারোপযোগী )
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, পনির
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-বাদাম, ডাল এবং দানা জাতীয় খাদ্য দ্রব্য
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
৮০০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম
কাজ
দেহ বিশেষ করে চর্বিহীন মাংসপেশী বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন
পেশীর স্বাভাবিক নড়াচড়া বজায় রাখে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বিহীন মাংস এবং দুধ ( তবে কম বেশি প্রায় সব খাবারের মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে )
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
২.৫ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)
আয়রণ
কাজ
রক্তের হিমেগ্লোবিনের হিম অংশ তৈরীর জন্য অপরিহার্য
অসংখ্য এনজাইমের অংশ হিসেবে অক্সিডেশন-রিডাকশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়
জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন-ট্রান্সফার সিস্টেমের জন্যে লৌহের প্রয়োজন
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা, ডিম, টেংরা মাছ, তাপসী মাছ, রুপাপাতিয়া মাছ বা এসব মাছের শুটকি
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-কাঁচা আম, আমচুর, কাল কচু শাক, ফুল কপির পাতা, শালগম পাতা, ডাঁটা শাক এবং অন্যান্য শাক
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
০৯ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
১০ মিলিগ্রাম (ছোট ছেলে মেয়ের জন্য)
১৮ মিলিগ্রাম (কিশোরের জন্য)
২৪ মিলিগ্রাম (কিশোরীর জন্য)
২৮ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার জন্য)
৩৩ মিলিগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)
আয়োডিন
কাজ
থাইরক্সিন নামক হরমোন তৈরীর জন্য অত্যাবশ্যকীয়
শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-সামুদ্রিক মাছ (তাজা/শুটকি)
প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সামুদ্রিক আগাছা
আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১৫০ মাইক্রোগ্রাম
পানি
কাজ
মানব দেহে যে কোন রাসায়নিক পরিবর্তনে সাহায্য করে
গ্রহণকৃত খাবার হজম, আত্মীকরন, শোষণ, সংগ্রহণ ও মল নিঃসরণ করে
শরীরে তাপমাত্রা রক্ষা করে
শরীরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে পুষ্টি উপাদান পৌছায়
শরীরের জোড়া অংশ নড়াচড়ায় সাহায্য করে
শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে
উৎস
প্রাকৃতিক উৎস (বিশুদ্ধ)
তরল খাবার বা পানিয়
শক্ত খাবার
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
প্রায় আড়াই থেকে তিন লিটার (পূর্ণ বয়স্কের জন্য)
সুষম খাদ্য
সুষম খাবার বলতে আমরা এমন খাবারের কথা বুঝি যাতে শরীরের প্রয়োজনীয় সবকটি খাদ্য উপাদানই সঠিক পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। সুষম খাদ্য তালিকায় শক্তিদায়ক,শরীর বৃদ্ধিকারক ও ক্ষয়পূরক এবং রোগ প্রতিরোধক খাবার উপযুক্ত পরিমাণে অন্তর্ভূক্ত থাকতে হবে।
বয়স, কাজ, লিঙ্গ ও শারীরিক অবস্থাভেদে সুষম খাদ্য ভিন্ন হতে পারে।
সুস্থ্য দেহের জন্য খাদ্য উপাদান ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার দৈনিক খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এছাড়া প্রয়োজনীয় পরিমাণ নিরাপদ পানি পান করতে হবে। দৈনিক খাদ্য তালিকায় যেন ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত কোন খাবার না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সুষম খাদ্য বলতে শুধু দামি খাদ্যকেই বুঝায় না। সস্তা খাদ্য সামগ্রী দিয়েও সুষম খাদ্য তৈরী করা যায়।
পুষ্টি
পুষ্টি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রহণ করা খাদ্য পরিপাক ও শোষিত হয়ে শরীরে তাপ ও শক্তি যোগায়, শরীরের বৃদ্ধিসাধন করে রোগ থেকে মুক্ত রাখে, ক্ষয়পূরণ করে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
পুষ্টির উৎস
চাল, ডাল
মাছ, মাংস
শাকসব্জী, ফলমূল
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন ‘বি’কমপ্লেক্স, ভিটামিন ‘সি’)
তেলে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন‘ডি’, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’)
ভিটামিন ‘সি’
পুষ্টিকর খাদ্য কেন প্রয়োজন
শরীর গঠন, বুদ্ধিমত্তা, শরীর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য
শারীরিক শক্তি বা কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য
জীবন চক্রের অতি গুরুত্বপূর্ন সময় যেমন- শিশুকাল, শৈশবকাল, কৈশোর, গর্ভাবস্থা, স্তন্যদানকাল ও বয়োসন্ধিকালে বিশেষ প্রয়োজনীয়, পরিমিত ও নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক অবস্থা ও দৈহিক ক্রিয়াকর্ম অনুযায়ী খাদ্য চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বা কম কিংবা অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ অপুষ্টি জনিত রোগের কারণ হতে পারে। তাই জীবনের সকল পর্যায়ে আমাদের পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করা উচিৎ। প্রথমে.....
ক্যালসিয়াম____? দেহের একটি জরুরি উপাদান
দেহের জন্য ক্যালসিয়াম একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। অন্যান্য খনিজ পদার্থ থেকে দেহে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশী। দেহে শতকরা ৯০-৯৯ ভাগ ক্যালসিয়াম থাকে হাড় ও দাঁতে। ক্যালসিয়াম ফসফরাসের সাথে মিলে এসব কঠিন তন্তুর কাঠিন্য প্রদান করে। ক্যালসিয়ামের বাকি অংশ শরীরের সব কোষের ক্রিয়াকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজকাল অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ বা গর্ভবতী মহিলা ক্যালসিয়াম বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। যে কোন মাছের কাঁটা বা নরম হাড় চিবিয়ে রস খাওয়ার মাধ্যমে অতি সহজে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ক্যালসিয়ামের দৈনিক আরও পড়ুন
চাহিদা গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৫০০-২০০০ মিলিগ্রাম, শিশুদের দৈনিক ১০০০-১৪০০ মিলিগ্রাম এবং প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের ৮০০-১০০০ মিলিগ্রাম।
প্রতিদিন আমাদের প্রচুর ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস হলো দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য। যেমন-দই, ছানা, পনির, মাখন, ক্ষির ইত্যাদি। এক গস্নাস দুধের মধ্যে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় ২৯০ মিলিগ্রাম। চর্বিযুক্ত এবং সর উঠানো দুধে ক্যালসিয়াম সামান্য পরিমাণ বেশি থাকে। দুধে অনেক ভিটামিন এবং উৎকৃষ্ট মানের প্রোটিন থাকে, যা ক্যালসিয়ামকে অঙ্গীভূত করতে সাহায্য করে। কোনো যুবক-যুবতী প্রতিদিন তিন গস্নাস দুধ এবং তার সাথে পনির ও দই দিয়ে নাশতা করলে তার প্রোটিনসহ ক্যালসিয়ামের দৈনিক চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব। দুধ ছাড়া ক্যালসিয়ামের অন্যান্য উৎসের মধ্যে কাঁটাসহ ছোট মাছ, ডিমের কুসুম, শিমের বিচি, সবুজ শাক-সবজি, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, কচুশাক, ঢেঁড়শ ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে।

আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম তৈরি হয় না। অবশ্যই খাবারের মাধ্যমে এর চাহিদা পূরণ করতে হয়। ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের দাঁত ও হাড়ের সুষ্ঠু গঠন হয় না। যার ফলে শরীরে শক্তি হয় না। ক্যালসিয়াম স্বল্পতায় শিশুদের হাড় ও পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা হয়ে থাকে। ক্যালসিয়ামের অভাব হলে শিশুদের দৈহিক গঠন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হাঁটা বিলম্ব হয়। ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন-ডি-এর অভাব হলে শিশুদের রিকেটস রোগ হয়, যার ফলে শিশু এক সময় পঙ্গুত্বের অভিশাপ বরণ করে। চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে বা রজঃনিবৃত্তির পর মহিলাদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় ক্যালসিয়ামের অভাব হলে অস্টিওপোরোসিস বা ‘হাড় ভঙ্গুর’ রোগের প্রবণতা বাড়ে অর্থাৎ অল্প আঘাতে হাড় ভেঙ্গে যায়। এজন্য বয়স্ক মহিলাদের ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। গর্ভকালীন সময়ে এবং প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজন। কারণ স্বাভাবিক খাবার দ্বারা অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ নাও হতে পারে। ক্যালসিয়ামের অভাবে গা, হাত-পায়ের জ্বালা-যন্ত্রণা করতে পারে। দেহের বিভিন্ন শিরা-উপশিরা পুরু হয়। এ সময় ক্যালসিয়ামের অভাবে মা ও শিশু দুজনেরই শারীকি সমস্যা হয়। দাঁত ও হাড়ের সুগঠন ছাড়াও ক্যালসিয়ামের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, তাহলো হ্নৎপিণ্ডের স্বাভাবিক স্পন্দন রক্ষা করা, রক্ত জমাট বাঁধায় সাহায্য করা ও হরমোন প্রক্রিয়া এবং মস্তিষ্ক, চোখ ও কানের প্রক্রিয়ায় ক্যালসিয়ামের ভূমিকা রয়েছে। মাংসপেশির সঙ্কোচনে ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব অনেক। কোষ বিভাজন ও রক্ত তৈরিতে ক্যালসিয়াম যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বাদ না পড়ে এবং খাবারের মাধ্যমেই যেন ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়।
প্রথমে.....
আঁচিল!!!!হোমিওপ্যাথিতেই নির্মূল করা সম্ভব
আঁচিল এক ধরনের টিউমারের মত গ্রোথ। ত্বকের অংশ বিশেষ শক্ত, মোটা, খসখসে দানার মত বৃদ্ধি পায়। ভাইরাল ওয়ার্টস এইচপিভি বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দ্বারা শরীরে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও এই ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট আঁচিল অন্যের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আঁচিল বা ভাইরাল ওয়ার্টস-এ চুলকায়। তখন আক্রান্ত স্থান চুলকালে বা ঘসলে এই ভাইরাস ত্বকের স্বাভাবিক স্থানেও ছড়াতে পারে। শুরুতে আঁচিলগুলো ছোট, দানারমত থাকে এবং প্রাথমিক অবস্থায় তুলে ফেলা হলে আঁচিলের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। আজকের বিষয় জেনিটাল ওয়ার্টস। জেনিটাল ওয়ার্টস পুরুষ ও মহিলাদের এক ধরণের ভাইরাস রোগ।
আরও পড়ুন.
এ নিয়ে ভুগছেন দেশের হাজার হাজার পুরুষ ও মহিলা। বিশেষ করে মহিলারা এ ধরণের সমস্যা কারও কাছে বলতে চাননা। যেতে চাননা ডাক্তারের কাছে। মাঝে মধ্যে আক্রান্ত মহিলারা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গেলেও সবক্ষেত্রে ভালো পরামর্শ পাননা। বাংলাদেশে কত মহিলা এই ভাইরাস জনিত যৌন রোগে আক্রান্ত তার কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মহিলা এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ২২-৩০ বছরের মহিলারা বেশী আক্রান্ত হয়। সাধারণত জেনিটাল ওয়ার্টস চিকিৎসা করে থাকেন চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞগণ। অনেক আক্রান্ত রোগীও এটা জানেননা। সব চেয়ে বড় কথা পুরুষ হোক আর মহিলা হোক প্রাথমিক অবস্থায় জেনিটাল ওয়ার্টস বা গোপন অঙ্গে আঁচিল ও আঁচিলের মতো গ্রোথ-এর ভালো চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এইচপিভি বা হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস থেকেই জেনিটাল ওয়ার্টস সংক্রমিত হয়। বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত একশত এর বেশী ধরণের জেনিটাল ওয়ার্টস-এর সন্ধান পেয়েছেন। এসবের বেশীরভাগ সেক্সচুয়াল কন্ট্যাকটির-এর মাধ্যমে ছড়ায়। অর্থাৎ হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসে আক্রান্ত পুরুষ অথবা মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে এ ভাইরাস অন্যের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। স্বামী আক্রান্ত হলে স্ত্রীর বা স্ত্রী আক্রান্ত হলে স্বামীর এধরণের সংক্রমণ ঘটে। তবে অনেক ক্ষেত্রে এইচপিভি ভাইরাস নিষ্ক্রিয় থাকে, ক্ষতির কারণ হয়না। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে জেনিটাল ওয়ার্টস নামক মারাত্মক এই ভাইরাস রোগের সংক্রমনের অন্যতম দায়ী জীবানু হচ্ছে এইচপিভি ভাইরাস এর ৬ ও ১১ সাবটাইপ। একথা ঠিক অন্যান্য হাই রিস্ক এইচপিভি ভাইরাস থেকে মহিলাদের সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে। সাধারণত পুরুষ ও মহিলাদের নিম্নাঙ্গে এই ভাইরাস বিভিন্ন ধরণের আঁচিল ও আঁচিলের মতো গ্রোথ তৈরী করে। এক সঙ্গে অনেকগুলো লেশন তৈরী হতে পারে। সাধারণত এক্সটারনাল জেনিটাল এরিয়া, ভালবা, পেরিনিয়াম, পেরিনিয়াল স্কিন, পুরুষের নিু অঙ্গ ও টেস্টিকুলার এরিয়াতে আক্রান্ত হয় বেশী। অনেক ক্ষেত্রে অনেকগুলো লেশন বা পিন্ড তৈরী না করে বরং একটা পিন্ড, বা গ্রোথ দেখা দেয়। এই ভাইরাস মহিলাদের ক্ষেত্রে নিুাঙ্গের মসৃন মিউক্যাস মেমব্রেন বা আবরনে, পায়ুপথের চারিপাশে ও ভেতরে, মূত্রনালীতে, সার্ভিক্স ও মুখের মিউক্যাস আবরণে এধরণের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। সাধারণত জেনিটাল ওয়ার্টস-এর ক্ষেত্রে মাংসের রং-এর সাদৃশ গ্রোথ দেখা দেয়। আক্রান্ত আঁচিলগুলো লাল অথবা বাদামী ডোম শেপড অথবা মসৃন থাকে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জেনিটাল ওয়ার্টস আক্রান্ত স্থানসমূহে সাধারণতঃ কোন ধরণের উপসর্গ থাকেনা। তবে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে এক্সটারনাল জেনিটাল এরিয়াতে সংক্রমণ ঘটলে মাঝে মধ্যে চুলকানি থাকতে পারে। তবে ইন্টারনাল ওয়ার্টস হলে সাধারণত কোন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়না। তবে আক্রান্ত স্থানের গ্রোথ বড় হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যথা, রক্ত ক্ষরণ এবং স্বামী-স্ত্রীর মিলনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করলে অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহিলাদের আক্রান্ত স্থানগুলো ইনফেকশন হয়ে ফুলে যায়। তীব্র ব্যথা হয় এবং নানা জটিলতা তৈরী হতে পারে। তাই কোন ভাবেই এধরণের সমস্যা গোপন না রেখে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।

আঁচিল গুলো সাধারনত: শক্ত ও খসখসে (ওয়ার্টি) থাকে। শরীরে নানা ধরণের ভাইরাল ওয়ার্ট হতে পারে। সাধারনত: আঙ্গুলের পিছনের দিক, বুড়ো আঙ্গুলের সামনেরর দিক, হাঁটু, পায়ের পাতায় আঁচিল দেখা দেয়। মুখে সাধারণত পেস্নন ওয়ার্টস বেশী থাকে। যা শেভ করার সময় কেটে গিয়ে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। এছাড়া নখের পাশে পেরিঅঙ্গুরাল, আঁচিল, ঠোটের ওপরে ও মুখেও আঁচিল হতে পারে। আর জেনিটাল ওয়ার্টস বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড হয়। ওয়ার্টস বা আঁচিল অনেক ক্ষেত্রে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে এবং বিব্রতকর হতে হয়। বিশেষ করে কালো খসখসে বড় আকৃতির শক্ত আঁচিলের ক্ষেত্রে।

সাধারণতঃ যে কোন অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞগণ সংক্রমণ দেখেই বলে দিতে পারেন জেনিটাল ওয়ার্টস কিনা। তবে যেসব ক্ষেত্রে নিশ্চিত রোগ সনাক্ত করা যায় না তখন বায়োপসি করার প্রয়োজন হতে পারে। জেনিটাল ওয়ার্টস এর বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা আছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ কি ধরণের পদ্ধতি অনুসরণ করেন তার ওপর। পুরুষের জেনিটাল ওয়ার্টস চিকিৎসা যতটা সহজ মহিলাদের জেনিটাল ওয়ার্টস হলে এর চিকিৎসা বা সার্জারী অতটা সহজ নয়। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলে বড় ধরণের ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে যখন ইন্টারনাল জেনিটাল এরিয়া আক্রান্ত হয়। তবে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ জেনিটাল ওয়ার্টস সস্পূর্ন অপসারণ করা বা চিকিৎসা সম্ভব। শতকরা ৫-১০ ভাগ ক্ষেত্রে জটিলতা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কি ধরণের ব্যবস্থা নেন মূলত তার ওপরই নির্ভর করে নিরাময়ের সাফল্য। সাধারণত তিন ভাবে আমরা জেনিটাল ওয়ার্টস-এর চিকিৎসা করতে পারি।

আঁচিলের চিকিৎসা: প্রথম- মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট বা ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা। দ্বিতীয়- সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট বা অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা। তৃতীয়- ইলেকট্রো ও আরএফ কটারি ও লেজার থেরাপি। তবে আক্রান্ত পুরুষ বা মহিলার আক্রান্ত স্থানের লক্ষণ বা উপসর্গ জেনিটাল ওয়ার্টস-এর আকার-আকৃতি ও আবস্থার ওপর নির্ভর করে কি ধরণের চিকিৎসা দিতে হবে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ক্রায়ো থেরাপি, ইলেকট্রোথেরাপি, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (আরএফ) থেরাপি এবং কার্বোন-ডাই অক্সাইড বা সিওটু লেজার ব্যবহার করা হয়। তবে আমি নিজে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে লেজার ব্যবহার না করার পক্ষে। মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট বেশীরভাগ ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। তাই বিশেষজ্ঞগণ সাধারণত আঁচিল বা আঁচিল সাদৃশ গ্রোথ অপসারণে বেশী গুরুত্ব দেন। তবে মেডিক্যাল চিকিৎসার মধ্যে ইমিকুইমড টপিক্যাল থেরাপি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে ট্রাইক্লোরো এসিটিক এসিড, পডোফাইলিন, ইন্টারফেরন ইত্যাদি ব্যবহারের প্রচলনও রয়েছে। আমি আগেই বলেছি জেনিটাল ওয়ার্টস এক ধরণের সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ভাইরাল ইনফেকশন। তাই এধরনের মারাÍক সংক্রমণ রোগ সহজে প্রতি রোধ করা যায়। সাধারণত অনৈতিক সংস্রব পরিহার, আক্রান্ত পুরুষ ও মহিলাদের সাথে প্রটেকশন ছাড়া মিলন পরিহার এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা উচিত এবং পাশাপাশি পুরুষ বা মহিলাদের যে কেউ আক্রান্ত হলে প্রাথমিক অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা করতে পারলে অবশ্যই এই যন্ত্রনাদায়ক বিব্রতকর প্যাপিলোমা ভাইরাস ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি শুধু অনুশাসন মেনে চললেই হবেনা, যথাযথ হাইজিনও মেনে চলতে হবে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আঁচিলের চিকিৎসা করতে চায়না কেউ। ফলে আঁচিল একদিকে যেমন বড় হয় অন্যদিকে তেমনি বড় আঁচিলের চিকিৎসায় ত্বকে ক্ষত তৈরী হতে পারে। সাধারণত: কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট, ক্রায়োথেরাপি, ইলেকট্রথেরাপি, আরএফ সার্জারী অথবা সিওটু লেজার দিয়ে আঁচিলের কার্যকর চিকিৎসা করা যায়। অনেক সময় কম্বিনেশন চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় আঁচিল সম্পূর্ণ ভালো হয় এবং ভবিষ্যতে আর দেখা দেয়না। তবে অসম্পূর্ণ চিকিৎসার ক্ষেত্রে আঁচিল আবার দেখা দেয়। তাই আঁচিলের যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারলে বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আঁচিলের চিকিৎসা একমাত্র হোমিওপ্যাথিতেই নির্মূল করা সম্ভব অন্য কোনো চিকিৎসা ব্যাবস্থায় আঁচিলের কোনো চিকিৎসা নেই। প্রথমে.....
 
 
বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র
নিম্নলিখিত রোগ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দ্বারা হোমিওপ্যাথি করা যায়:
১. মাইগ্রেন
২. নাকসংক্রান্ত এলার্জি
৩. সাইনাসের প্রদাহ
৪. টন্সিলের প্রদাহ
৫. শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি
৬. চুলের সমস্যা/চুল পড়া
Read More >>
হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
 
     
 
 
 
কপিরাইট © ২০১৬ মো: আম্মার আব্দুল্লাহ দ্বারা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । ডিজাইন এবং নির্মাতা মো: আম্মার আবদুল্লাহ