হোমিওপ্যাথিকসাইটে আপনাকে স্বাগত
সুখ আর অসুখ পাশাপাশি চলে। সংসারে যত লড়াই সংগ্রাম সে তো কেবল সুখের আশায়। অল্প সুখে মানুষ তৃপ্ত নয়। চাই অনুপম ও অনন্ত সুখ। তবে একজনের অপ্রত্যাশিত সুখের প্রত্যাশা অন্যের অশান্তির কারণ হতে পারে। কিন্তু অশান্তি কারো কাম্য নয়। তাই, শান্তির জন্য দেখা দেয় পারস্পরিক বিরোধ। পরিণতিতে তা যুদ্ধেও রূপ নিতে দেখা যায়। শান্তির মাঝে এভাবেই অশান্তির বীজ নিহিত থাকে। অসুখের অপর নাম রোগ বা ব্যাধি। সুখ আর অসুখ যেমন অবিচ্ছেদ্য তেমনি স্বাস্থ্য ও ব্যাধি পরস্পর অবিচ্ছেদ্য। স্বাস্থ্য এবং ব্যাধি দুটোই মানুষের দেহকে ঘিরে। অতএব, দেহের বাইরে কোন ব্যাধি নেই। ব্যাধির অবস্থান স্বাস্থ্যের বিপরীতে। ব্যাধিকে মানুষ তাই তার শত্রু বলেই জানে। ব্যাধি নামক শত্রুকে ধ্বংস করার জন্য মানুষ অনন্তকাল ধরে যুদ্ধ করে চলেছে।
ব্যাধি দেখতে কেমন? এর স্বরূপ কি? এর অবস্থান কোথায় এবং কিভাবে? এসব প্রশ্নেরর উত্তর খুঁজতে গিয়ে মানুষ সঠিক উত্তর কখনো পায়নি। অনুমানের আশ্রয় নিয়েছে। ডাঃ হানেমানের সময় অনেকটা অনুমানের উপর নির্ভর করে ভেষজ গাজ-গাছড়া থেকে তৈরী জড়ি-বড়ি ও নির্জাস রোগীদের সেবন করানো হতো। এসব অনুমান নির্ভর ওষুধের অনেকগুলোই থাকত বিষাক্ত। ফলে, অজানা বিষাক্ত ঔষুধ সেবন করে অনেক রোগীকেই প্রাণ দিতে হতো। চিকিৎসার এই করুণ দশা ডাঃ হানেমানকে বিদ্রোহী করে তোলে। তিনি চিকিৎসা পেশা ত্যাগ করেন।
গবেষণার এক পর্যায় লক্ষ্য এবং আবিস্কার করলেন ঔষুধ রোগ সৃষ্টি করে বলে তা রোগ আরোগ্য করে। গবেষণার মাধ্যমে তিনি আরও পড়ুন....
আরো জানতে পারেন, ঔষুধ বস্তুত সুস্থ মানুষের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ঘটানোর মধ্যেই তার আরোগ্যকারী শক্তি নিহিত। মানুষ সৃষ্টির সেরা। শ্রেষ্ঠ সে বিবেকসম্পন্ন মনের অধিকারী বলে। ডাঃ হানেমানই প্রথম বলেন, জীবনীশক্তির কথা এবং দেহমনের সাথে জীবনীশক্তির অবিচ্ছেদ্য রোগে এবং সুস্থতার কথা। অন্য প্রাণীর মন বলে কিছু নেই। সে জন্য অন্য প্রাণীর শরীরে পরীক্ষীত ওষুধ মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয়। ডাঃ হানেমান মানুষের রোগ নিরাময়কারী ওষুধ আবিস্কারের জন্য সুস্থ শরীরে ওষুধের গুণাগুন পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন। তিনি নিজে সর্বপ্রথম সিংকোণার রস সেবন করে এর রোগ সৃষ্টিকারী মত আবিস্কার করেন। দেহ-মনে সিংকোনা সৃষ্ট অসুস্থতা জ্ঞাপক লক্ষন নিনয় নির্ধারণ করেন। অতঃপর সদৃশ লক্ষনে রোগীকে সিংকোণা প্রয়োগ করে তার আরোগ্যকারী মতবাদ সম্পর্কে নিশ্চিত হন। পৃথিবীতে এই প্রথম বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে ওষুধ আবিস্কার হল। আবিস্কার হলো মানুষের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞান।
জগতবাসীকে নিরাপদ ওষুধ উপহার দেয়ার উদ্দেশ্যে ডাঃ হানেমান নিজের জীবন বিপন্ন করে একটি একটি করে অজানা ওষুধ নামক বিষ সেবন করলেন। তিনি তার পারিবারিক সদস্য এবং বন্ধু-বান্ধবদের শরীরে ওষুধের পরীক্ষা চালালেন। প্রুভার সোসাইটি গঠন করে ব্যাপকভাবে ওষুধের আরোগ্যকারী গুণাগুন যাচাই করতে লাগলেন। মানসিক লক্ষণসহ মাথা থেকে শুরু করে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গে প্রকাশিত লক্ষণ প্রুভার নিজে অথবা অন্য কাউকে দিয়ে অত্যন্ত যত্ন সহকারে অবিকল লিখে নিতেন। পরীক্ষা কার্য সম্পূর্ণভাবে শেষ হবার পর সকল পরীক্ষকদের শরীর থেকে প্রাপ্ত লক্ষণ শ্রেণীবদ্ধ করা হত। যে লক্ষনটি সকল প্রুভারের শরীরে প্রকাশ পায় সেটি প্রথম শ্রেণীর, যে লক্ষণটি অধিকাংশ প্রুভারের শরীরে প্রকাশ পায় সেটি দ্বিতীয় শ্রেণীর, যে লক্ষণটি অল্প সংখ্যক পরীক্ষকের শরীরে প্রকাশ পায় সেটি তৃতীয় শ্রেণীর এবং অবশিষ্ট লক্ষণগুলো চতুর্থ শ্রেণীর। পূর্ণাঙ্গ মেটিরিয়া মেডিকাতে লক্ষণের শ্রেণী নির্দেশ করেই প্রতিটি ওষুধের লক্ষণ উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
কোন একটি ওষুধ পূণাঙ্গ প্রুভিং হয়েছে বলে তখনই বিবেচিত হবে যখন তাতে প্রতিটি লণের প্রকাশ স্থল, অনুভুতি, হ্রাস-বৃদ্ধি ও আনুষঙ্গিক লক্ষণ উল্লেখ থাকবে। প্রতিটি ওষুধের পরীক্ষায় মানসিক সার্বদৈহিক, বিশেষ এবং সাধারণ লক্ষণের উল্লেখ্য থাকতে হবে। হোমিওপ্যাথিক নিয়মে পরীক্ষিত ওষুধের চিত্র নিয়ে রচিত হয় হোমিওপ্যাথিক মেটিরিয়া মেডিকা।
হোমিওপ্যাথিক ওষুধের নামের অধীনে কেবল কিছু লক্ষণ দিয়ে সজ্জিত পুস্তককেই হোমিওপ্যাথিক মেটিরিয়া মেডিকা বলা যাবে না। হোমিওপ্যাথিক মেটিরিয়া মেডিকা বলতে ওই সমস্ত লক্ষণ সম্বলিত ওষুধ নিয়ে রচিত পুস্তককে বুঝাবে যে পুস্তকে স্থান পাওয়া প্রতিটি অবিমিশ্র ওষুধ বিভিন্ন স্থানে বহু সুস্থ মানুষের শরীরে ভালভাবে পরীক্ষিত হয়েছে, প্রুভারদের নিকট থেকে প্রাপ্ত লক্ষণগুলো যত্ন সহকারে বিশ্বস্ততার সাথে সহজ সরল ভাষায় অবিকল লিপিবদ্ধ করা হয়েছে; মানসিক লক্ষণসহ মাথা থেকে পা পর্যন্ত প্রতিটি দেহযন্ত্র ও অঙ্গ-প্রতঙ্গে প্রকাশিত লক্ষণের সঠিক বর্ণনা রয়েছে; প্রতিটি লক্ষণের প্রকাশস্থল, হ্রাস-বৃদ্ধি, অনুভূতি ও আনুষঙ্গিক অবস্থার বর্ণনা দেয়া আছে এবং মানসিক, সার্বদৈহিক, বিশেষ এবং সাধারণ লক্ষণের শ্রেণীভিত্তিক বর্ণনা রয়েছে। ডাঃ হানেমান নব্বইটি ওষুধ পরীক্ষা করেছিলেন। তাঁর রচিত ‘মেটিরিয়া মেডিকা পিউরা’ আদর্শ হোমিও মেটিরিয়া মেডিকার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
বলাবাহুল্য, বাজারে এখন নামধেয় নানা ধরণের মেটিরিয়া মেডিকা পাওয়া যায়। রোগের নাম উল্লেখ করে সেই রোগের লক্ষণবর্ণিত, অপরীতি, অর্ধ-পরীতি এবং রোগীর শরীর থেকে সংগৃহীত লক্ষণ নিয়ে রচিত মানসিক লক্ষণ, সার্বদৈহিক লক্ষণ, হ্রাস-বৃদ্ধি কোন বর্ণনা ব্যতীত প্রণীত মেটিরিয়া মেডিকায় বাজার এখন সয়লাব। এইসব মেটিরিয়া মেডিকাতে প্রাকৃতিক রোগ সদৃশ লক্ষণ সমষ্টির কোন বর্ণনা না থাকলেও বায়োকেমিক এবং নিম্নশক্তির ওষুধের তথাকথিত প্রয়োগ অভিজ্ঞতার বিস্তর বর্ণনা পাওয়া যায়। বলা আবশ্যক, বায়োকেমিক ও হোমিওপ্যাথি সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী। ফলে হোমিওপ্যাথিক সাথে বায়োকেমিকের প্রয়োগ ক্ষতিকর বটে। কলেজ পড়–য়া কমলমতি ছেলে- মেয়েদের হাতে প্রায়শ: দেখা যায় রকমারি চটিচাট মেটিরিয়া মেডিকা। এইসব মেটিরিয়া মেডিকার মধ্যে আরোগ্য নির্দেশিক কোন লক্ষণেরই উল্লেখ থাকে না। এসব বই পড়ে ভুল শিক্ষা এবং বিপথগমিতা ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হচ্ছে না।
আমরা জানি, সুস্থ মানুষের শরীরে ওষুধ প্রয়োগ করে অসুস্থতার সৃষ্টি অর্থ্যাৎ রোগ সৃষ্টি করা হয়। সেজন্য ওষুধ ব্যাধিকে কৃত্রিম ব্যাধি বলা হয়েছে। ওষুধ মানেই কৃত্রিম রোগ। পক্ষান্তরে মানুষের প্রাকৃতিক কারনে যখন রোগ হয় তখন তাকে বলা হয় প্রাকৃতিক রোগ। প্রাকৃতিক রোগের বিরুদ্ধে কৃত্রিম রোগ ব্যবহার করেই আরোগ্য আনায়ন করা হয়। ওষুধকে তাই প্রাকৃতিক রোগ ধ্বংশকারী অস্ত্র বলা হয়ে থাকে। ওষুধ নামক অস্ত্রের ব্যবহারকারী হলেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের সমস্ত জ্ঞান অর্জনের একমাত্র লক্ষ্য হল ওষুধের যুক্তিযুক্ত ব্যবহারে পারদর্শিত লাভ করা। যাতে ওষুধের বিষক্রিয়ায় রোগী কোনক্রমেই তিগ্রহস্থ না হয়।
রোগীকে চিকিৎসাজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে হলে চিকিৎসকদের জ্ঞান অর্জনে দু’টো শর্ত পূরণ হতে হবে-
(১) রোগের সাথে ওষুধের সদৃশ্যকরণ প্রণালী সম্পর্কে জ্ঞান এবং
(২) ওষুধের প্রয়োগ প্রণালী সম্পর্কে জ্ঞান। বিষয় দুটি ব্যাপক এবং গভীর অনুশীলনের দাবী রাখে। এখানে আমরা সদৃশ করণ প্রণালীতে ওষুধের ভূমিকা ও স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করছি। ওষুধ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের দৃষ্টিভঙ্গি কি হবে তা আমরা কেবল মাত্র ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ বারবার অধ্যয়ন করলে জানতে পারি। অর্গাননের তিন নম্বর অনুচ্ছেদে ডাঃ হানেমান প্রশ্ন রেখেছেন রোগের মধ্যে কি আরোগ্য করতে হবে এবং ওষুধের মধ্যে আরোগ্যকর শক্তি কি। অতঃপর, অর্গাননের অবশিষ্ট অনুচ্ছেদগুলোতে এসব প্রশ্নের সমাধান দেয়া হয়েছে। অতএব, বলা হবে, অর্গানন মানে হোমিওপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি মানে অর্গানন। মোট কথা, অর্গাননের বাইরে কোন হোমিওপ্যাথি নেই। বাজারে প্রাপ্ত সকল মেটিরিয়া মেডিকা অগ্যাননের নিকতিতে ওজন করে এর গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে। ওষুধ অধ্যয়নে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী হবে, একটি ওষুধের জীবন চরিত্র সম্পর্কে ভালভাবে জানা। যেমন আমরা আমদের একান্ত প্রিয়জনকে জানি বা চিনি। একজন মানুষের মন-মেজাজ, আকৃতি, মুখাবয়বসহ প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গের সাথে গভীর পরিচয় গড়ে ওঠার মধ্যে দিয়ে যেমন তাকে সঠিকভাবে চেনা যায় তেমনিভাবেই ওষুধ নামক একটি কৃত্রিম রুগ্ণ মানুষের প্রতিচ্ছবি সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি দ্বারা পরিচিত হবার জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে। অনেকে যেমন তার অতিক আপনজনকে না দেখে স্পর্শ দ্বারাই সনাক্ত করতে পারে তেমনিভাবে কোন একটি ওষুধের যে কোন ওষুদের নির্দেশক লক্ষণের প্রকৃতি বুঝলেই পুরো ওষুধটি প্রায় ক্ষেত্রে চিনতে পারা যাবে। একজন নিয়মিত শ্রোতার গানের একটি লাইন ও এর সুর শোনার সঙ্গে সঙ্গে যেমন গায়ককে চিনতে তার দেরি হয় না তেমনি একটি ওষুধকে চেনার জন্য এমন কিছু মূল সুর থাকে যার মাধ্যমে ওষুধকে চিনতে পারা যায়।

আবার বাহ্যিকভাবে দেখে একজন মানুষকে প্রথম চিনতে আমরা যে কৌশল অবলম্বন করি, মানুষরূপী একটি ওষুধকে চিনতে একই কৌশল অবলম্বন করতে হবে। প্রথম দেখায় আমরা কোন মানুষের বাহ্যিক চেহারার একটি সামগ্রিক ছবি মনের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করি। বার বার মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে নিখুঁতভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তার আকৃতি ও চেহারা মানসপটে একে নেই। ঠিক মুখস্ত করা নয়; উপলব্ধি দ্বারা অনুভূতিতে ধারণ করা। মনে করে রাখা নয়; দেখামাত্র মনে পড়ে যাওয়া। মানুষের ছবির মতই প্রুভাররা কৃত্রিমভাবে রুগ্ণ মানুষের একটি নিখুঁত ছবি তৈরী করেন। প্রতিটি ওষুধ হবে একটি রুগ্ণ মানুষের স্বতন্ত্র প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি ওষুধ অধ্যয়ন করে আলাদা আলাদাভাবে এক একটি রোগীচিত্র জানা যায়।
অন্য কথায়, মানুষের যেমন নিজস্ব স্বত্বা আছে ওষুধেরও। প্রতিটি বস্তু বা প্রাণী স্বত্বা আপন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র অবয়ব লাভ করে। প্রতিটি ওষুধ বস্তুরও নিজস্ব স্বত্বা রয়েছে। প্রতিটি ওষুধ তার স্বত্বাকে ঘিরে আপন চেহারায় রূপ লাভ করে। বৈচিত্র্যপূর্ণ লক্ষণরাজি দ্বারা প্রতিটি ওষুধ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়ে ওঠে। বৈশিষ্টপূর্ণ লক্ষণ দিয়েই প্রতিটি ওষুধকে চিনতে পারা যায়।
একজন হোমিওপ্যাথির ছাত্রকে মেটিডিয়া মেডিকা অধ্যয়ন করার সময় চারটি বিষয় চিন্তা থেকে বাদ দিতে হবে-
(১) বিচ্ছিন্ন ও খন্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি;
(২) রোগের নাম ভিত্তিক রোগ লক্ষণের অধ্যয়ন;
(৩) নিদান বিদ্যা অনুসারে রোগকে চেনার চেষ্টা করা এবং
(৪) জীবাণু রোগ সৃষ্টি করে।
পক্ষান্তরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক মেটিরিয়া মেডিকা অধ্যয়নকালে নিম্নবর্ণিত বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে-
(১) অদৃশ্যে বিশ্বাস স্থাপন;
(২) জীবনীশক্তি রোগের উৎস এবং মনের যোগ ও সহযোগিতায় শরীর পর্যায়ে রোগ লক্ষণের প্রকাশ ঘটায়;
(৩) নিরবচ্ছিন্ন একটি ওষুধ অদ্যাপান্ত অধ্যয়ন করে এর লণাসমষ্টি আয়ত্ব করা চিকিৎসকের একমাত্র ব্রত;
(৪) মানসিক, সার্বদৈহিক এবং বিশেষ লণের শ্রেণীবিন্যাস করে অধ্যয়ন ওষুধের স্বতন্ত্র পরিচিত জানার অন্যতম পথ;
(৫) প্রতিটি লণের প্রকাশস্থল, হ্রাস-বৃদ্ধি, অনুভূতি এবং আনষাঙ্গিক অবস্থা বিশেষভাবে আয়ত্ব করতে হবে;
(৬) অদ্ভুত, অসাধারণ, চিত্তাকর্ষক এবং বিরল লক্ষণের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে;
(৭) ওষুধের প্রতিটি লক্ষণকেই তার সামগ্রিকতার অংশ হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং
(৮) জীবনীশক্তি যখন শরীরে বিকৃত জীবনপ্রবাহ স্থাপন করে রোগ সৃষ্টি করে তখন কোন কোন ক্ষেত্রে রোগের ফলস্বরূপ জীবাণু বা পরজীবি ধরণের ক্ষুদ্র কীটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
মানুষের প্রাকৃতিক রোগের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসককে ওষুধ চিনতে হয়। ওষুধ চরিত্রের সদৃশ্য ঘটাতে হয় রোগ চরিত্রের সাথে। সে জন্য ওষুধ অধ্যয়নের আগে রোগ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। রোগের স্বরূপ কি এবং রোগের মধ্যে কি আরোগ্য করতে হবে সে সম্পর্কে চিকিৎসকের পরিস্কার জ্ঞান থাকতে হবে। বলাবাহুল্য, সোরা, সাইকোসিস এবং সিফিলিস মিয়াজম নানা নামে এবং নানারূপে প্রকাশিত সকল রোগের মূল কারণ। সে জন্য মিয়াজমসমূহের স্বরূপ ও গতিবিধি সম্পর্কে চিকিৎসকের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। অতএব রোগ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ওষুধ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের পূর্ব শর্ত।
পরিশেষে, প্রতিটি ওষুধ স্বতন্ত্র নামে, স্বতন্ত্র লক্ষণে এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে বলে প্রতিটি ওষুধকে নিবিড়ভাবে চেনার জন্য এককভাবে বারবার অধ্যয়ন করতে হবে। যখন প্রতিটি ওষুধ আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে মনের মধ্যে স্থান পাবে তখন সেটি আর কখনো মন থেকে মুছে যাবে না। অনুরূপ চেহারা ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে যখন কোন প্রাকৃতিক রোগী চিকিৎসার জন্য আসবে তখন কেবলমাত্র ঐ দৃশ্য ওষুধটির কথা স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠবে। এ প্রসঙ্গে ডাঃ কেন্ট বলেন, “সর্বাগ্রে প্রত্যেক ভেষজকে পৃথক স্বত্বারূপে অনুশীলন করতে হবে, অত:পর সেগুলির তুলনামূলক বিচার করতে হবে। একক সত্তাগুলির ব্যুৎপত্তি সম্পূর্ণ অধিগত হবার পূর্বেই তুলনামূলক ‘মেটিরিয়া মেডিকা’ আলোচনা করা বিভ্রান্তকর” (দশম ব্যাখ্যান, হোমিওপ্যাথির দার্শনিক বক্তৃতা) প্রথমে.....
বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র
নিম্নলিখিত রোগ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দ্বারা হোমিওপ্যাথি করা যায়:
১. মাইগ্রেন
২. নাকসংক্রান্ত এলার্জি
৩. সাইনাসের প্রদাহ
৪. টন্সিলের প্রদাহ
৫. শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি
৬. চুলের সমস্যা/চুল পড়া
Read More >>
হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
 
     
 
 
 
কপিরাইট © ২০১৬ মো: আম্মার আব্দুল্লাহ দ্বারা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । ডিজাইন এবং নির্মাতা মো: আম্মার আবদুল্লাহ