|
| বসন্তরোগের লক্ষণ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা |
 |
শীতের শেষে ও পুরো বসন্তকাল জুড়ে এই রোগের প্রার্দুভাব দেখা যায়। রোগ আক্রমনের কয়েক দিন আগে থকেই জ্বর জ্বর ভাব, শরীর ব্যাথ্যা চলতে থাকে।
প্রথমে মুখে, গলায়, ঘাড়ে পানিপূর্ন গোটা দেখা দেয়। পরে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে যায়।
উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর থাকে। শরীর চুলকায়। জ্বালাযন্ত্রনা হয়।
কোন কোন রোগীর পুজ সৃষ্টি হয়।
সাধারনত ১ সপ্তাহের মধ্য ভাল হয়ে যায়।
দ্রুত আরোগ্যের জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহন করা যেতে পারে। হোমিও ঔষধের দ্বারা দ্রুত বের হয়ে দ্রুত শুকিয়ে যায়।
সতর্কতা :
গোসল করা যাবেনা।
নখ দিয়ে চুলকানো উচিত নয়।
মাছ, মাংস খাওয়া চলবে না।
আরও পড়ুন. জলবসন্তে মৃত্যুর ঝুঁকি কম, তবে পরে উল্লেখযোগ্য যেসব জটিলতা হতে পারে, তা হচ্ছে বুকের সমস্যা- নিউমোনিয়া, মস্তিষ্কের সমস্যা এনকেফালাইটিস, কিডনির সমস্যা গ্লোমেরুলোনে-ফরাইটিস, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশির সমস্যা মায়োকার্ডাইটিস ইত্যাদি। এ ছাড়া এ রোগের আরেকটি ঝুঁকি হলো জলবসন্ত ভালো হওয়ার বহু দিন পরও শরীরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা এ ভাইরাসটি আবার কষ্টদায়ক হারপিসজোস্টার নামক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। জলবসন্ত রোগীর খাবারে কোনো বাছ-বিচার নেই, সব কিছুই খাওয়া যায়। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, প্রয়োজনীয় সেবা-যত্ন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ সেবন করানোই হচ্ছে এ সময় রোগীর পরিবারের সদস্যদের জন্য করণীয়। তবে যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে তাই রোগীকে যতটা সম্ভব পৃথক ঘরে রাখা এবং ব্যবহার্য দ্রব্যাদি আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা উচিত।
আগেকার দিনে মানুষের দেহে দুই প্রকার পক্স হতো। একটি হলো স্মলপক্স বা গুটিবসন্তু আর অন্যটি হলো চিকেনপক্স বা জলবসন্ত। দু’টি রোগই ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। প্রথমটির ভাইরাসের নাম ভেরিওলা ভাইরাস আর দ্বিতীয়টির নাম ভেরিসেরা ভাইরাস।
স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের অস্তিত্ব বর্তমানে পৃথিবীতে নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে এবং সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী একযোগে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে এ রোগ পৃথিবী থেকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। ১৯৮০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ রোগটি পৃথিবী থেকে নির্মূল বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। গুটিবসন্তে আক্রান্ত রোগীর কষ্ট, মৃত্যুহার ও পরবর্তী জটিলতা ছিল জলবসন্ত অপেক্ষা অনেক বেশি। বিশেষ করে ত্বকে গর্ত গর্ত স্থায়ী দাগ রোগীকে সারাজীবনই বয়ে বেড়াতে হতো।
বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে যে বসন্তটি হচ্ছে- সেটা জলবসন্ত। সাধারণত ১০ বছরের কম বয়সী শিশুরাই এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। তবে, আগে হয়ে না থাকলে যেকোনো বয়সেই হতে পারে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, জলবসন্ত একবার হলে সারা জীবনের জন্য শরীরে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে ওঠে। ফলে সাধারণত দ্বিতীয়বার আর হয় না। তবে, এর কিছু কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায় অর্থাৎ কারো কারো দ্বিতীয় বারো হয়ে থাকে। জলবসন্ত ছোঁয়াচে একটি রোগ। বাড়ির যেকোনো একজন সদস্য আক্রান্ত হলেই বাকি সবারই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশি-থুথু-লালা ইত্যাদির মাধ্যমে এ রোগ অন্যদের শরীরে সংক্রমিত হয়। শরীরে জীবাণু সংক্রমণের এক থেকে তিন সপ্তাহ পর রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া শুরু করে। শুরুতে শরীরে সামান্য জ্বর, খাবারের অরুচি, ম্যাজমেজে ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। তারপর শুরু হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে দানা ওঠা। তালুতে, বুকে, পিঠে, হাতে, পায়ে, মুখে ইত্যাদি শরীরের সব স্থানেই অসংখ্য দানা ওঠে। দানার সংখ্যা কারো কারো ক্ষেত্রে কম আবার কারো কারো ক্ষেত্রে খুব বেশিও হতে পারে। মুখের ও গলার ভেতরে দানা উঠলে ঢোক গিলতে এবং খেতে কষ্ট হয়। মাথায় হলে চুল আঁচড়াতে অসুবিধা হয়। চোখের ভেতরে হলে স্থায়ী দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে সাথে সাথে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। দানাগুলো প্রথমে ঘামাচির মতো দেখা যায়, তারপর খুব দ্রুত বড় হয়ে পানিভর্তি ফোসকায় পরিণত হয়। আর এ জন্যই এটাকে জলবসন্ত বলা হয়।
পরে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন হয়ে এই পানিভর্তি ফোসকা পুঁজভর্তি সাদা ফোসকায় পরিণত হতে পারে। এ অবস্থায় চুলকানির সাথে সাথে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা ও জ্বর হতে পারে। পুঁজ বা পানিভর্তি এ ফোকসাগুলো পরে শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায়। প্রথম তিন মাসের মধ্যে সন্তানসম্ভবা মায়ের জলবসন্ত হলে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বা শিশু জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাতে পারে।
জলবসন্তঃ- এটা একটি ইনফেকশান যা ভেরিসেলা-জোসটার নামক ভাইরাস দ্বারা হয়। এটা খুবই সংক্রামক এবং এটার ইনফেকটেড ড্রপলেট্স নিশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করলে এটা ছড়ায়।
# উপসর্গগুলিঃ-
১. জ্বর
২. গোটা গুলি কি রকমের হয়
৩. লাল হয়ে য়ায়, ঘা থেকে শুরু হয়
৪. ঘা যা পরে ফোড়ার মত হয়ে যায় এবং তাতে জল ভরে যায়
৫. মুখে সব চেয়ে বেশী হয়, মাথায় এবং হাত পা বাদ দিয়ে বাকি শরীরে
৬. চুলকানি বাড়তে পারে
# যে সব কথা মনে রাখারঃ
১. কোন বাচ্চার জল বসন্ত হলে অ্যাসপিরিন নিতে পারবে না কারণ এই সময়ে অ্যাসপিরিন নিলে Reye's Syndrome (রেয়েস সিনড্রোম) হতে পারে। যার ফলে ব্রেন ড্যামেজ এমন কি মৃত্যুও হতে পারে। ডাক্তার দেখিয়ে কি ঔষধ খেতে হবে সেটা জানতে হবে।
২. বড়দের এর সাথে নিমোনিয়া হতে পারে। যাদের এইচয়াইভি আছে বা ইমিউন সিসটেম ডেফিসিয়েনসি আছে তাদের নিমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী।
৩. গর্ভবতী থাকাকালীন, যদি তাঁর কখনই জল বসন্ত না হয়ে থাকে তাহলে, যার হয়েছে এমন লোকের সংস্পর্শে আসা উচিত্ না।
# চিকিৎসাঃ এই ক্ষেতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা খুবই উপযোগী।
জলবসন্তের লক্ষণ:
ইংরেজি পক্স মেস বাংলায় বসন্তরোগ বা গুটিকা রোগ। এর আয়ূর্বেদ শাস্ত্রীয় নাম মসূরিকা।
বসন্তরোগ দু’প্রকার। যথা জলবসন্ত বা চিকেন ফক্স এবং গুটিবসন্ত বা স্মল ফক্স। জলবসন্তের আবার দু’টি প্রকার ভেদ আছে। সিম্পল টাইপ জলবসন্ত এবং একিউট টাইপ জলবসন্ত।
সিম্পল টাইপ জলবসন্তের লক্ষণ -
সিম্পল টাইপ জলবসন্তে জ্বরের উত্তাপ তেমন হয় না, প্রায়ই ৯৮-১০০ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
সামান্য জ্বর হয়ে সারা শরীরে অল্প পরিমাণ গুটি বের হয়ে যায়।
গুটি বেরিয়ে গেলে জ্বর ছেড়ে যায়।
গুটি বের হবার পর শুকোবার আগে আবার একটু জ্বর আসতে পারে।
সিম্পল টাইপ জল বসন্ত তেমন কষ্টকর নয়।
একিউট টাইপ জলবসন্তের লক্ষণ-
এটি তুলনামূলক কষ্টদায়ক এবং এতে নানা লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন-
জ্বর ১০৩/১০৪ ডিগ্রি হয়। রোগী প্রলাপ বকতে পারে বা আচ্ছন্নের মত পড়ে থাকতে পারে।
জ্বর আসার সময় শরীরে কম্প সৃষ্টি হতে পারে, জ্বর সহজে ছাড়তে চায় না।
জ্বরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে গুটিকাগুলো প্রকাশ লাভ করে।
এগুলো দেখতে অনেকটা মটর দানার মত। অগ্রভাগ চ্যাপটা না হয়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং কিছুটা সূঁচালো।
৩-৪ দিন পর গুটিকাগুলোতে পানি জমে এবং ফোস্কার মত দেখায়। তারপর ধীরে ধীরে পুঁজ হতে শুরু করে। ।
গুটি বের হলে জ্বর কমে যায়।
অনেক সময় শুকোবার আগে আবার জ্বর বৃদ্ধি পায় ও রোগীর কষ্ট হয়।
কোন কারণে গুটি গলে গেলে বা ঘষা লাগলে তাতে ঘা হয় এবং খুব ব্যথা হয়। তাই যাতে ঘষা না লাগে এবং ঘা না হয় সে দিকে অবশ্য দৃষ্টি রাখা কর্তব্য।
জলবসন্তে শরীর চুলকায় এবং মামড়িগুলো তাড়াতাড়ি উঠে যায়।
এই রোগে আক্রান্তদের শরীরের চামড়ায় কোন রকম গভীর ও স্থায়ী ক্ষত চিহ্ন থাকে না। প্রথমে দাগ সৃষ্টি হলেও আস্তে আস্তে তা সেরে যায়।
গুটি বসন্তের লক্ষণ :
ডা. পান্ডে গুটিবসন্তের গুরুত্বপূর্ণ কিছু লক্ষণ বর্ণনা করেছেন। লক্ষণগুলো হচ্ছে-
গুটিবসন্তের ভাইরাস দেহে প্রবেশ করার পর ১০/১২ দিন পর্যন্ত প্রচ্ছন্নভাবে থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই রেগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। গুটিবসন্তের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলো নিম্নরূপ ঃ
প্রথমে খুব কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে মাথা ধরা, মুখ লাল হওয়া, অবসাদগ্রস্ততা, কোমর, গা, হাত, পা প্রভৃতিতে ব্যথা হয়। জ্বর সাধারণতঃ ১০৩/১০৪ ডিগ্রি হয়। জ্বর বেশি হলে প্রলাপ বা আচ্ছন্ন ভাব দেখা যায়।
তিন চার দিন জ্বরে ভোগার পর গায়ে গুটি বের হতে শুরু হয়। গুটি বেশি হয় মুখে, হাতের কনুই থেকে নীচের অংশে এবং পায়ের হাঁটু থেকে নীচের অংশে। মুখ, হাত ও পায়ের গুটি আগে বের হয় তারপর অন্যান্য জায়গায়। ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শরীরের নরম স্থানের চাইতে শক্ত স্থানে গুটি বেশি হয়। ১২ থেকে ১৫ ঘন্টার মধ্যে সারা শরীরে গুটি বেরিয়ে যায়। গুটিগুলো প্রথমে লাল ফুস্কুড়ির মত দেখায়। মৃদুভাবে হাত বুলালে এ গুলো শক্ত দানার মত মনে হয়। গুটি বের হবার ২দিন পর এগুলো ফেঁপে উঠে এবং পানিভরা ফোস্কার মত দেখায়। এই সব ফোস্কা কিন্তু নিটোল। এগুলোর অগ্রভাগ বা মাথা একটু চাপা বা টোল খাওয়ার মত হয়। এই টোল খাওয়া লক্ষণটি হল আসল বসন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন। ২-৩ দিন পর গুটিগুলো আস্তে আস্তে পাকতে শুরু করে। এর ভেতরের জলীয় অংশ ক্রমে অস্বচ্ছ ও গাঢ় হয়ে পুঁজে পরিণত হয়।
গুটি সব বের হয়ে যাবার পর জ্বর কমে আসে। রোগী একটু সুস্থ বোধ করে। কোমর ও শরীরের ব্যথা কমে আসে।
পুঁজ হলে নুতন করে আবার জ্বর হয় এবং কষ্টদায়ক সব লক্ষণ আবার দেখা দেয়। গুটির মধ্যকার বিষাক্ত পদার্থ এসে রক্তে মেশে। তার ফলে নানা উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে।
কখনো কখনো কাশি, গলাব্যথা স্বরভঙ্গ লক্ষণও দেখা যায়।
রোগ মারাত্মক না হলে ১২-১৩ দিন পর থেকে গুটি শুকাতে শুরু করে। ১৬-১৮ দিন থেকে খোসা উঠতে থাকে এবং ২১ দিনের মধ্যে পরিষ্কাভাবে শুকিয়ে যায়।
বসন্ত একটি মারত্মক সংক্রামক ব্যাধি। যদি কারো বসন্তরোগ ধরা পড়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যারা রোগীর সেবা করেন বা দেখাশুনা করেন তাদের প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ঘরে শিশু থাকে তাহলে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। কোন মতেই এ রোগ নিয়ে অবহেলা করা যাবে না। রোগ মারাত্মক হলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবশ্য এ রোগ থেকে প্রতিরোধ করা যায়। জাতিসঙ্গের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী এই রোগ নির্র্মূলে বিস্তারিত কর্মসূচি রয়েছে। বর্তমানে আগের তুলনায় বসন্তরোগের সক্রমন ও বিস্তার এবং এর কারণে মৃত্যুহার অনেক কমে এসেছে। নিঃসন্দেহে এটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের অবদান, গণসচেতনতা এবং আল্লাহ তা’লার বিশেষ করুণা।
যেহেতু বসন্ত একটি সংক্রামক রোগ। তাই কোথাও এ রোগ দেখা দেয়ার সাথে যথাযথ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় এ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, ইউনানী নানা চিকিৎসা ব্যবস্থায় বসন্তরোগ প্রতিরোধে বহু কার্যকর মেডিসিন বের হয়েছে। সুতরাং কোন ঘর বা এলাকায় বসন্তরোগ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞ ডাক্তার, হাসপাতাল বা নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোন মতেই বিলম্ব করা যাবে না।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি সংস্করণ। বর্তমানে দেশে বসন্তরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হোমিও চিকিৎসা ব্যবস্থায় অন্যান্য রোগের ন্যয় বসন্তরোগের অত্যন্ত ফলপ্রদ ও পরিপূর্ণ নিরাময়ে সক্ষম চিকিৎসা রয়েছে। একটি কথা এখানে বলে রাখা ভাল যে, হোমিওপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসা হয় না, রোগীর চিকিৎসা করা হয়। হোমিওপ্যাথি সম্পূর্ণ লক্ষণ ও সাদৃশ্য চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই এখানে নির্দিষ্ট কোন ওষুধ নেই। রোগী ও রোগ লক্ষণ অনুযায়ী যে যার জন্য যে ওষুধ প্রয়োজন হয় তাই প্রয়োগ করতে হবে।
হোমিওপ্যাথিতে মোটামোটি তিনটি মেডিসিনকে বসন্তের প্রধান ও প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ওষুধ তিনটি হচ্ছে- ভেরিওলিনাম, ভ্যক্সিনিনাম ও ম্যালেন্ড্রিনাম। রাস টক্স, আর্স এল্বাম ওষুধ দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেলেডোনা এবং হিপার সালফার প্রায়ই প্রয়োজন হয়।
বসন্তগুটির দাগ শুকাবার জন্য অপরাপর ওষুধের তুলনায় আমি বহু রোগীর চিকিৎসায় থুজা মেডিসিনটি অধিক কার্যকর পেয়েছি।
প্রথমে.....
|
|
|
| সুস্থ থাকুনহোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন |
 |
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা এখন সারাবিশ্বে মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় একটি নিরাপদ চিকিৎসা হিসেবে গ্রহণীয় হয়ে উঠেছে। বিশ্বের ৬৬টি দেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণের কারণে মানদেহে জটিল রোগ দেখা দিচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় খারাপ প্রতিক্রিয়া কম। যান্ত্রিক এই সভ্যতার যুগে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে মানুষের মানুষিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এই নষ্ট মানসিকতার
আরও পড়ুন
প্রতিবিধান রয়েছে হোমিওপ্যাথিতে। সমাজে চোর, ডাকাত, খুনি, গুণ্ডা, লোভী ও স্বার্থপর ইত্যাদি আচরণের কারণে তাদের পরিচয় ফুটে উঠে। কিন্তু প্রত্যেকের পরিচয় এর কারণ- মানসিক রোগী ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের বিকৃত মানসিকতার পরিবর্তন করে দিতে পারে হোমিওপ্যাথি। দূরারোগ্য রোগীর চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থা ।
শিশুদের ছোটবেলা থেকে হোমিও চিকিৎসা করালে তাদের বংশগত বা জিনগত নানা প্রকার মানসিক ও দৈহিক সমস্যা দূর হয়ে যায়। মহিলাদের গর্ভাবস্থায় সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়া অথবা সন্তান প্রসবকালে যাদের বাধা আসে তাদের চিকিৎসা করে মুক্ত করা যায়। গ্যাস্ট্রিক, আলসার, ডিউডেনাল আলসার, টিউমার, অর্শ, টনসিল, কিডনি পাথর, পলিপাসসহ বিভিন্ন রোগীর ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি পারে সার্জনের ছুরির হাত থেকে বাঁচাতে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা করা হয়। তাই সুস্থ নাগরিক ও বিশ্ব স্বাস্থ্যসেবায় হোমিওপ্যাথি সারাবিশ্বে সফলতার সাথে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা সকলের মধ্যে বিলিয়ে দেয়ার জন্য লক্ষণ অনুসারে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবায় হোমিওপ্যাথি, ওষুধ সেবন, মাত্রা উল্লেখসহ ছোট পরিসরে প্রতিবেদনটি দেওয়া হলো, যা দেশবাসীর উপকারে কাজে লাগবে বলে মনে করছি।
* আঘাতে প্রথম অবস্থায়- আর্ণিকা ছয় (বাহ্যিক ব্যবহার) ৩০,২০০ (সেবন)। আঘাতের সাথে কালো দাগ থাকলে আর্ণিকা, লিডাম ৩০,২০০।
* আঘাত লেগে কেটে যাওয়া- ক্যালেন্ডুলা ছয় (বাহ্যিক ব্যবহার) ৩০ সেবন।
* পেরেক, লোহার তারকাটা ফুটলে– লিডাম পল ৩০,২০০ ।
* সুচ ফুটে যাওয়া– হাইপেরিকাম ২০০।
* শিশুদের বমি– ইপিকাক ৩০,২০০।
* শিশুদের দুধ খেলেই বমি– ইথুজা ৩০,২০০।
* নাক দিয়ে হঠাৎ রক্ত, স্রাব– মিলিফোলিয়াম ৩০।
* হঠাৎ জ্বর, কারণ জানা নেই– একোনইট ৩০। জ্বরের প্রথম অবস্থা বেলেডোনা ৩০ ।
* হঠাৎ করে শিশুদের পেট ব্যথা– ক্যামমিলা ৩০ ।
* ট্রেনে বা বাসের ধারে বসার কারনে ঠাণ্ডা লাগা– একোনাইট ৩০, হিপার ৩০।
* তেল জাতীয় খাবার খেয়ে পেট খারাপ– পালসেটিলা ৩০ ।
* মাংস খেয়ে পেটের গোলমাল– নাক্স ভোমিকা ৩০ ।
* হঠাৎ মানসিক উত্তেজনা– ইগ্নেসিয়া ৩০,২০০ ।
* হঠাৎ ভয় পাওয়া, আক্ষেপ, একোনাইট ৬ ।
* কাজ করতে করতে হঠাৎ পায়ে হাতে খিল ধরা– ম্যাগফস ৩০।
* স্তনে আঘাত– কনিয়াম ২০০ ।
* দাঁত তোলার পর রক্ত স্রাব হেমামেলিস Q ৩০ ।
* ধোয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট- আর্ণিকা ৩০, বোভিস্টা ২০০ ।
* জুতা পরার কারণে ফোস্কা পরলে– এলিয়ামসেপা ৩০ ।
* মশা, বোলতা ও কীটপতঙ্গ কামড় দিলে– লিডাম ৩০, এনথ্রাক্স ৩০।
* গলায় মাছের কাটা ফুটলে– এনাগেলিস ৩০, সাইলেসিয়া ৩০।
* মহিলাদের দেরিতে মাসিক, মাসিক বন্ধ, অল্প পরিমাণ মাসিক হওয়া– এমিল নাইট্রেট ৩০ ।
* মাসিকের সময় কোমরে ব্যথাসহ চাপ চাপ রক্তস্রাব– স্যাবাইনা ২০০।
* মাসিকের রক্তস্রাব অল্পমাত্রায় হয়, কিন্তু অধিক সময় স্থায়ী হয়– এব্রোমা আগস্টা ছয়। অনিয়মিত মাসিক– জনোসিয়া অশোকা ছয়। ডিমের সাদা অংশের মতো সাদাস্রাব– বোরাক্স ৩০। সাদাস্রাব ঘন, ক্রিমের মতো ঘন– পালসেটিলা ৩০।
* জোনিদারে অসম্ভব চুলকানি– ফ্যাগোপাইরাম ৩০।
* অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ– চায়না ৩০। লম্বা যুবকের নিয়মিত স্বপ্নদোষ– এ্যাসিডফস ২০০।
* লিঙ্গের দুর্বলতা, ধজভঙ্গ, উত্তেজনা কম– টার্নেরা ছয়।
ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে খাবার গ্রহণে ৩০ মিনিট আগে পরে গ্রহণ করা ভাল। এছাড়া ওষুধ সেবনের সময় পেঁয়াজ, রসুন, টক, চুন, চা, বিড়ি-সিগারেট, সোডা ও মদ খাওয়া বর্জন করতে হবে। এছাড়া কোনো ওষুধ অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবন করলে নতুন কোনো রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
যাদের উক্ত লক্ষণের সঙ্গে প্রথমিকভাবে লক্ষণ মিলবে তারা স্বল্প পরিমাণ ওষুধ সেবন করে আরোগ্য লাভ করতে পারবেন। এছাড়া পুরাতন, জটিল ও কঠিন রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করা দরকার।
আধুনিক যুগে হোমিওপ্যাথি এখন রড় লোকের অশ্রয় আর গরিবের সাশ্রয়মূলক জনপ্রিয় চিকিৎসায় পরিণত হয়েছে। এই চিকিৎসা সেবা সকলে গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন। সুস্থ মানুষ ও দেশ গঠনে সবাই এগিয়ে আসুন- এই কামনা করছি।
প্রথমে.....
|
|
|
| হোমিওপ্যাথিক ঔষধে– কিভাবে আরোগ্য ঘটে ? |
 |
দক্ষতার সাথে ক্রনিক রোগের মোকাবেলা করতে আধুনিক ঔষধ ব্যর্থ হবার কারণে সমাজ আজ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার দিকে ফিরে যাচ্ছে । আমরা
হ্যানিম্যানের আবিস্কারক জীবনকে ধাপে ধাপে অনুসরণ করে এসেছি, সদৃশ্যের নীতি, প্রাকৃতিক বস্তুগুলোর বিষাক্ততা দূর করে তার ভেতরের আরোগ্য সাধিকাশক্তি আহরণ পদ্ধতি , স্বাস্থ্য এবং রোগের মূল ভিত্তি জীবনীশক্তির ধারণা এবং ক্রনিক রোগের অন্তর্নিহিত কারণ হিসাবে মায়াজমের স্বরূপ উদঘাটন । আমরা
খানিকটা দৃষ্টি দিয়েছি কিভাবে হোমিওপ্যাথিতে রোগী লিপি প্রণয়ন করতে হয়, যার ভিত্তিতে সঠিক ঔষধ নির্ণয় করা যায় এবং তা প্রয়োগে বিস্ময়কর ফলাফল
আরও পড়ুন. ঘটে ।
হোমিওপ্যাথি কাজ করে, কিভাবে এটি কাজ করে তা জানার জন্য বস্তুর প্রকৃতি অনুধাবনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে । সত্য হচ্ছে, এর জবাব কেতাবি,
যেহেতু চিকিৎসার প্রধান বাধ্যবাধকতা হচ্ছে আরোগ্য দেয়া এবং আমাদের হোমিওপ্যাথি সম্পর্কিত জ্ঞান তা করার জন্য যথেষ্ট । তা সত্বেও মানুষের মন জবাব ছাড়া সন্তুষ্ট হয় না । উপস্থিত জ্ঞানের কাঠামোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জবাবটি আমি সংক্ষেপে দিতে পারি ।
রোগীর লক্ষণ বলতে কি বোঝায় তা অনুধাবনে খুব বেশী বেগ পেতে হয় না, লক্ষণ হচ্ছে রোগীরা যা দেখায় , তারা যা বলে, রোগকে জয় করার জন্য
এটি হচ্ছে প্রকৃতির হাতিয়ার । যেমন হিপোক্রাটিস যথার্থ ভাবেই বলেছেন , বমির দ্বারা গা বমি ভাব দূর হয় । এর মর্ম কথা হচ্ছে, প্রতিটি জীবদেহে একটি
“ প্রতিরোধ কার্যক্রম ” । ( রোগাবস্থায় জীবনীশক্তির ক্রিয়ার প্রকাশ ) ধারণ করে । যখনই কোন ক্ষতিকর প্রভাব ভেতর বা বাইরে থেকে আক্রমণ করে,
তখনি তা ক্রিয়াশীল হয়ে উঠে । আমরা জানি, প্রতিটি সংক্রামক রোগের একটি নিদিষ্ট সুপ্তিকাল আছে, এ সময়কালে রোগী তার অসুস্থতা সম্পর্কে কিছুই
বুঝতে পারে না । এ সুপ্তিকাল শেষে প্রকৃত লক্ষণগুলো বের হয়ে আসে, তা থাকতে পারে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিনব্যাপি । এখানেই রোগের গতিময়তার
মতবাদ সম্পর্কিত প্রথম ইঙ্গিতটি পাওয়া যায় । রোগের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা ঘটে কতিপয় লক্ষণের উপস্থিতির মাধ্যমে । কিন্তু এগুলো সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি কি – সত্যি
কি কিছু সৃষ্টি হয় ? মানুষ যখন কোন কিছুর মাধ্যমে; কিছু সৃষ্টি করে, প্রথমে তা মনে প্রসুত হয় । এ ধারণাটি হচ্ছে গতিময় স্তরে সৃষ্টির উন্মেষ ।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যখন একটি নতুন যন্ত্র তৈরি ক্রা হয়, প্রথমে আবিস্কারকের মনে তা অস্কুরিত হয়, এরপর সে মন থেকে কাজটি আম্পন্ন করে ।
সকল সৃষ্টির জন্যই এ “ সৃষ্টির গতিশীল উৎস নীতিটি প্রযোজ্য ” মহাবিশ্বের মূল সৃষ্টি, মানুষ সৃষ্টি বা মানুষের কাজ, যে কোন সৃষ্টি হোক না কেন, সকল
সৃষ্টির ক্ষেত্রেই নীতিটি প্রযোজ্য । যেহেতু উপরে তাই নীচে As above, so below । প্রকৃতি এভাবেই কাজ করে , যথারীতি এভাবেই রোগ সৃষ্টি করে । যখন
কোন ক্ষতিকর প্রভাব তার প্রতি সংবেদনশীল জীবদেহের সংস্পর্শে আসে সেখানে আমরা পরিষ্কারভাবে ধনাত্মক ও ঋণাতক, আলো এবং আঁধার , পুরুষ ও
নারী এরা যেমন বিপরীত তেমনি একটা সংঘর্ষ দেখতে পাই – এরপর রোগটি গতিশীল স্তরে প্রোথিত হয় । এরপরেই কেবল আমরা জীবদেহে তার
ফলাফলগুলো দেখি ।
এ গতিশীল বিশৃঙ্খলা সমস্ত জীব সত্বাকে প্রচণ্ডভাবে ঝাঁকুনি দেয়, শুরু হয় এর কেন্দ্র থেকে, প্রথমে তা মানবদেহের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (
Electromagnetic Field ) কে আক্রমণ করে । মানবদেহের সাথে একটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড সম্পৃক্ত, এ ধারণাটি সাম্প্রতিক সময়ের আগ পর্যন্ত খুব
একটা মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে নি । ফিল্ড পরিমাপের যন্ত্র নিয়ে আধুনিক গবেষণা এবং কিরলিয়ান ফটোগ্রাফি
( Kirlian Photography )২ থেকে দেখা গেছে, একটি উচ্চ ক্রিয়াশীল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড প্রতিটি জিবন্তু দেহে প্রবাহিত হচ্ছে । এ ফিল্ডগুলোর
প্রাবল্যতা পরিমাপযোগ্য এবং তা অত্যন্ত গতিশীল বলে প্রতীয়মান হয় । মুহূর্তে মুহূর্তে এ ফিল্ডের প্রাবল্যতা পরিবর্তন হচ্ছে, এ পরিবর্তনের কারণ – চেতনার
পরিবর্তন , আবেগজনিত পরিবর্তন, ড্রাগ বা মদ গ্রহণ, এমনকি রোগব্যাধি অর্জন ।
বায়ো - ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ( Bio - Electromagnetic Field ) আবিষ্কার নিউটনিয়ান ( Newtonian ) পদার্থ বিজ্ঞানের ধারনার ক্ষেত্রে এক
বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন এনেছে । দৃশ্যমান বস্তুগত জগৎ পরিচালনার নিয়ম নিউটন ব্যাখ্যা করেছেন, এ সূত্র নিউটনের সময় যেমন ছিল এখনও তেমনি বৈধ্য
আছে । যাহোক অ্যাটমিক স্তরের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের জন্য নতুন একটা ধারণার প্রয়োজন ছিল যা আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞান দিয়েছে । বস্তুত এসব ধারণা
স্বীকার করে যে, শক্তি এবং বস্তুকে পৃথকভাবে শ্রেণিভুক্ত করা যায় না । এরা পরস্পর পরস্পরের সাথে পরিবর্তনশীল এবং তারা সার্বক্ষণিকভাবে যাকে ফিল্ড
বলা হয়, সেই সুত্রে পরস্পরের উপর ক্রিয়া করে । এ নতুন পরিপ্রেক্ষিতের গুরুত্ব সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করেছেন আলবার্ট আইনস্টাইন ।
আমরা তাই বিবেচনা করতে পারি, বস্তু এমন একটা আধারে গঠিত হয় যেখানে ফিল্ড প্রবল শক্তিশালী ... এ নতুন ধরনের পদার্থ বিজ্ঞানে বস্তু এবং ফিল্ড
উভয়ের একত্রিত স্থান নেই, একমাত্র বাস্তবতা হচ্ছে ফিল্ড ।
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডগুলোর বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা যায় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কম্পন দ্বারা । অ্যাটমিক নিউক্লিয়াসের চারদিক ইলেকট্রনগুলো ক্রমাগত ঘুরছে, এ
ঘূর্ণনের গতি প্রথমে একদিকে যায়, আবার অন্যদিকে, বাইরে থেকে এরকমই দেখা যায় । সামনে পেছনে এ দলন একটি নির্ধারিত ফ্রিকোয়েন্সিতে (
Frequency ) ঘটতে থাকে । ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারণ নির্ভর করে সাব-অ্যাটমিক বস্তুর ধরন এবং তার শক্তির মাত্রার উপর । যাহোক এখানে যেটুকু আমাদের
প্রয়োজনে লাগবে, তার মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও মনোযোগ আকর্ষণ বিষয় হচ্ছে – সকল বস্তুই কম্পন স্তরে অস্তিত্ববান, আর প্রতিটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক
ফিল্ড কম্পন মাত্রা ( Frequency ) দ্বারা বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত হয় এবং তা পরিমাপযোগ্য ।
মানবদেহ এর ব্যতিক্রম নয় । একটি অত্যন্ত জটিল অবস্থানকে অতি স্থূলভাবে সরলীকরণ করলে বলা যায়- প্রতিটি স্বতন্ত্র মানব সত্ত্বা একটি নির্ধারিত
কম্পনমাত্রায় অস্তিত্ববান থাকে । যে মাত্রা গতিশীল ভাবে প্রতি সেকেন্ডে পরিবর্তিত হয়, এ পরিবর্তন নির্ভর করে ব্যক্তির মানসিক অবস্থা, অভ্যন্তরীণ বা
বাহ্যিক চাপ, অসুস্থতা ইত্যাদির উপর । জীবনী শক্তি এক প্রকার সূক্ষ্ম শক্তির সমধর্মী এবং তা জীব সত্ত্বার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের সদৃশ ।
কখনো কোন ক্ষতিকর প্রভাব ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডকে আক্রমণ করলে, দুটো বিষয় ঘটতে পারে । যদি ব্যক্তির ধাতুগত অবস্থা শক্তিশালী এবং ক্ষতিকর
উত্তেজকটি দুর্বল হয়, তখন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের কম্পন মাত্রায় হালকা পরিবর্তন হয় এবং তা খুবই অল্প সময়ের জন্য । ব্যক্তিটি তার ভেতরে কোন
কিছু আদৌ ঘটেছে কিনা তা বুঝতেও পারে না ।
যদি উত্তেজকটি জীবনী শক্তিকে অভিভুত করার মত যথেষ্ট শক্তিশালী থাকে, তবে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের কম্পন মাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে, এর
প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তিটি অনুধাবন করতে পারে । প্রতিরোধ কার্যক্রম তখন কাজে নেমে যায়, যার ফলে মানসিক, আবেগ ও শারীরিক স্তরে
পরিবর্তন সুচিত হয় ।
যখন কোন উত্তেজক সত্যিকার অর্থেই জীবন অস্তিত্বের জন্য হুমকির সৃষ্টি করে বা ব্যক্তির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন প্রতিরোধ কার্যক্রমকে সক্রিয়
হবার জন্য আহ্বান জানানো হয় । একমাত্র তখনই দেহে গতির প্রক্রিয়া শুরু হয়, রোগী তা লক্ষণ হিসাবে অনুভব করে । লক্ষণগুলো অন্যকিছু নয়, আগ্রাসী
ক্ষতিকর প্রভাবের হাত থেকে দেহকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা থেকে উদ্ভুত প্রতিক্রিয়া, যা স্রেফ ইতিপূর্বে গতিশীল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্তরে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার
দৈহিক প্রকাশ ।
হোমিওপ্যাথির কাজ হচ্ছে দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ কার্যক্রমকে শক্তিশালী ভাবে সক্ষম করে তোলা, এর সাথে নিজস্ব রসদ ও শক্তি জোগান দেয়া । জীবনী
শক্তি যে গতি পথে ক্রিয়া পরিচালনা করে, এটিও সেই একই লখ্যে কাজ করে, জীবনীশক্তির বিপরীত নয় । এ গতিপথ, এ প্রাকৃতিক জৈব প্রতিরোধ ক্রিয়ার
বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিক্রিয়াকে সংক্ষেপে বলা যায় লক্ষণসমূহ, এলোপ্যাথি যে গুলকে অনেক পরিশ্রম করে চাপা দিয়ে দেয় ।
যেহেতু সকল বস্তুই নিজস্ব বিশিষ্টমণ্ডিত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ধারণ করে, হোমিওপ্যাথির কাজ হচ্ছে এমন একটি বস্তু খুঁজে বের করা যার কম্পনমাত্রা
রোগ ভোগকালিন সময়ে রোগীর দেহের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের কম্পনমাত্রার সাথে সর্বোচ্চ সদৃশ হয় । আগে যেভাবে আলোচনা করা হয়েছে, কম্পনমাত্রা
প্রকাশ পায় লক্ষণ সমষ্টি দ্বারা- যাহোক তা রোগীর রোগের প্রকাশ বা ঔষধ প্রয়োগের পর প্রুভিং হিসেবে । যখন রোগী এবং ঔষধ উভয়ের কম্পনমাত্রা
এক হয়, তখন একটি ঘটনা ঘটে, যা পদার্থ বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের খুবই পরিচিত, তা হল রেজোন্যান্স ( Resonance ) । যেমন একই ফ্রিকোয়েন্সির
দুটি টিউনিং ফর্ক দু জায়গায় রেখে যদি একটিকে টোকা দেয়া হয় তখন সেটি অন্যটিকে উদ্দীপ্ত করে ( তখন অন্যটিও বেজে ওঠে – অনুবাদক ), তাই
ঔষধ রোগীর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডকে আরোগ্যের জন্য সঠিকভাবে, যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমন করে বৃদ্ধি করে ।
এ ধরনের সুফল পেতে, ঔষধ নির্বাচন অবশ্যই রোগীর সঠিক কম্পনমাত্রার খুবই নিকটবর্তী হতে হবে । এজন্যই সম্পূর্ণ যোগ্যতাসম্পন্ন হোমিওপ্যাথের পরামর্শ
নেয়া প্রয়োজন, যারা বিখ্যাত কোন স্কুলে কমপক্ষে চার বছর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং হোমিওপ্যাথির মূলনীতিগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করেন, এ বিষয়টি
খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
অনেক হোমিওপ্যাথ আছেন যাদের হোমিওপ্যাথি সম্পর্কিত জ্ঞান আংশিক, তারা প্রতিনিয়তই মুলনিতি থেকে মারাত্মকভাবে বিচ্যুত হয়ে যান । তারা
হোমিওপ্যাথিক মতে প্রস্তুতকৃত ঔষধ প্রয়োগ করেন, তাই বলে কোনক্রমেই তাদেরকে হোমিওপ্যাথ বলা যায় না । অসম্পূর্ণ হোমিওপ্যাথি ক্রিয়া করতে পারে
না, তা বিষাক্ত এলোপ্যাথিক ঔষধের মতই রোগীর সরাসরি ক্ষতি করে, এগুলো জীবনীশক্তিকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে । যদি এরকম অনিয়মকৃত
প্রয়োগ যথেষ্ট লম্বা সময় ধরে চলে, রোগীর এত ক্ষতি হয় যে, পরবর্তীতে কোন উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন হোমিওপ্যাথও রোগীর স্বাস্থ্য আর পুনঃরুদ্ধার করতে
পারেন না ।
রেজোন্যান্স নীতির ( সদৃশ নীতি ) কারণে, যে ঔষধ রোগীর সকল লক্ষণকে সম্পৃক্ত করে না তা ক্রিয়া করে না, দু তিনটি ঔষধ রোগীর লক্ষণগুলোকে
সম্পূর্ণভাবে আয়ত্তে আনতে পারবে মনে করে যদি এক সাথে প্রয়োগ করা হয়, তবু তা ক্রিয়া করবে না । যুক্তি দ্বারা হয়ত প্রতিষ্ঠিত করা যায়, যদি একটি
ঔষধ শতকরা ৮০ ভাগ লক্ষণ উৎপাদন করতে পারে, অন্য একটি ঔষধ ২০ শতাংশ লক্ষণ উৎপাদন করতে পারে, কাজেই এদুটো ঔষধ একসাথে নিরাপদে
প্রয়োগ করা যায় । এবং তা সম্মিলিতভাবে রোগটি তাড়াবে । কিন্তু আসলে তা এভাবে কাজ করে না । এটি সংখ্যাগত বিষয় নয়- এমন নয় যে, বিভিন্ন
লক্ষণের সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে
বিভিন্ন ঔষধ একসাথে প্রয়োগ ক্রলেই হবে ; বরং এটি হচ্ছে গুণগত বিচার, প্রকৃতিতে এ সমস্ত ঔষধই গুণগত দিক থেকে পরস্পর বিসদৃশ ( কম্পনমাত্রার
দিক থেকে ) এবং এরা পরস্পর সুরের অনৈক্য সৃষ্টি করে ।
স্থূলভাবে উদাহরণ দিলে, আমরা বিটোফেনের দুটো সুর যদি শুনি, এরা প্রত্যেকেই নিজস্বভাবে ভিন্ন মেজাজে আমাদের মনে দাগ কাটবে, যদি দুটোকে একসাথে
মিশ্রিত করে দেই, তবে আমরা শুধু অর্থহীন এবং অসহ্য কিছু বাজনা শুনব, যার মধ্যে সুরের অনৈক্য প্রকট হয়ে উঠবে । প্রতিটি ঔষধেরই ভাইব্রেশন
ফ্রিকোয়েন্সি আছে, এগুলোকে ক্রিয়া করতে হলে তাকে অবশ্যই বিশৃঙ্খলার প্রকৃতির সাথে সদৃশ হতে হবে এবং তা এককভাবে প্রয়োগ করতে হবে ।
প্রফেসর জর্জ ভিথোলকাস
প্রথমে.....
|
|
|
| হোমিওপ্যাথিক মতে ঔষধের শক্তি – বাড়ানো বা কমানো |
 |
হোমিওপ্যাথির জনক মহাত্মা হ্যানিম্যান অর্গাননের ২৭৫ হইতে ২৭৯ নং সুত্রে ঔষধের মাত্রা সম্বন্ধে তাহার বক্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন । ঔষধ নির্বাচন ঠিক না হইলে যেমন রোগ সারে না, ঔষধের মাত্রা যদি যথেষ্ট ক্ষুদ্র না হয় তাহা হইলে ঔষধ সুনির্বাচিত হইলেও কোন সুফল আশা করা যায় না । সদৃশনীতি অনুসারে নির্বাচিত ঔষধের মাত্রা যদি পরিমাণে বেশী হয় তাহা হইলে রোগের অবাঞ্ছিত বৃদ্ধিই হইয়া থাকে ।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাত্রা লইয়া এ পর্যন্ত অনেক আলোচনা হইয়া গিয়াছে, এখনও শেষ কথা বলা হয় নাই ।
আরও পড়ুন. মাত্রা বলিতে ঔষধের পরিমাণই বুঝা যায়, শক্তির প্রশ্ন এখানে আসে না । পরিমাণ আবার নির্ভর করে আয়তনের উপর । সুতরাং মাত্রা – পরিমাণগত, তাহা নির্ভর করে ঔষধের বাহক যেমন অনুবটিকার সংখ্যা ও আয়তন এবং সুরাসার ও জলের পরিমাণের উপর ।
কিন্তু শক্তি হইল গুণগত । একই শক্তির ঔষধের মাত্রাকে হ্রাসবৃদ্ধি করা যায় তাহার পরিমাণ বা আয়তনকে কমাইয়া বা বাড়াইয়া । সেইজন্য মাত্রা ও শক্তির অর্থ এবং তাহাদের প্রভেদ সম্বন্ধে একটা স্পষ্ট ধারনা থাকা প্রয়োজন । অনেকে মনে করেন, ঔষধের ক্রিয়া যখন গুণগত তখন তাহার পরিমাণ বা আয়তন যাহাই হউক তাহাতে কিছু আসে যায় না, দুইটি অনুবটিকার স্থলে দুই ফোঁটা ঔষধ – একই কথা । কিন্তু হ্যানিম্যান ঔষধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে শক্তি ও মাত্রা – এই উভয় দিকেই দৃষ্টি দিবার উপদেশ দিয়াছেন, এই বিষয়ে কোন সংশয় নাই ।
সদৃশনীতি অনুসারে নির্বাচিত ঔষধের মাত্রা বা পরিমাণ যত বেশী হইবে তত বেশী অপকারের সম্ভাবনা । এই সম্বন্ধে হ্যানিম্যান বিশেষভাবে অবহিত হইতে বলিয়াছে । একথাও তিনি বলিয়াছে, সদৃশ নহে এমন এলোপ্যাথিক ঔষধের বেশী মাত্রা যতটা না ক্ষতি করে সদৃশ লক্ষণানুযায়ী সুনির্বাচিত ঔষধের মাত্রা যদি অধিক হয় তাহা হইলে অধিকতর ক্ষতিসাধন করে । তাহা ছাড়া সুনির্বাচিত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ যদি পুনঃপুনঃ প্রয়োগ করা হয় তাহা হইলে তাহা রোগকে জটিল ও দুরারোগ্য করিয়া তোলে । তাহাতে প্রাকৃতিক রোগ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় বটে কিন্তু ঔষধজ রোগ উৎপন্ন হইয়া রোগী অধিকতর কষ্ট পায় । এই সকল রোগীকে প্রতিষেধক ঔষধ দিয়াও আরোগ্যের পথে আনা দুঃসাধ্য ।
সুতরাং হ্যানিম্যানের শিক্ষা হইল
==================
১ > সুনির্বাচিত ঔষধের ক্ষুদ্রতম মাত্রা ব্যবহার করিতে হইবে । হ্যানিম্যানের মতে একটি অনুবটিকাই ক্ষুদ্রতম মাত্রা । তাহার স্থলে পাঁচ ছয়টি অনুবটিকা বা তরল ঔষধের একাধিক ফোঁটা বৃহৎ মাত্রা । এইরূপ একটি অনুবটিকা জলে দ্রবীভূত করিয়া তাহাই হ্যানিম্যান ব্যবহার করিতে বলিয়াছে ( সুত্র ২৪৮ ) ।
২ > নিন্মশক্তির বৃহৎ মাত্রা অপেক্ষা উচ্চশক্তির বৃহৎ মাত্রা অধিকতর ক্ষতিকর ।
৩ > ঔষধ সঠিক নির্বাচিত হইলেও রোগ অসাধ্য হইয়া উঠিতে পারে এইজন্য পুনঃপুনঃ ঔষধ প্রয়োগ নিষিদ্ধ
এলোপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়াতে প্রত্যেকটি ঔষধের মাত্রা নির্দিষ্ট করা আছে ও সেই বাঁধাধরা নিয়মে ঔষধের ব্যবস্থা করা হয় । কিন্তু হোমিওপ্যাথিক মতে সেইরূপ ছককাটা ব্যবস্থা চলে না । বিভিন্ন রোগীর ক্ষেত্রে একই শক্তি চলে না, কাহাকেও নিন্মশক্তি কাহাকেও উচ্চশক্তি দিতে হয়, সেইরূপ মাত্রারও হ্রাসবৃদ্ধি করা প্রয়োজন হয় ।
এইরূপ মাত্রা ও শক্তিনির্ণয় রোগীর সহিষ্ণুতা, অনুভুতিপ্রবণতা এবং যান্ত্রিক ক্ষয়ক্ষতির উপর নির্ভর করে । ইহা নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের ধৈর্য, বিচারশীলতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় । ইহা পূর্ব হইতে কোন বাঁধাগতে নিরূপণ করা যায় না ।
হ্যানিম্যান নিশ্চয়তার সহিত ইহা বলিয়াছে যে দেহের কোন প্রয়োজনীয় যন্ত্র যেমন, ফুসফুস, মস্তিস্ক, যকৃৎ প্রভৃতি যদি গুরুতরভাবে ক্ষয় ও ক্ষতিগ্রস্ত না হইয়া থাকে তাহা হইলে ঔষধের মাত্রা যতই ক্ষুদ্র হউক না কেন তাহা সদৃশ নীতি অনুসারে প্রযুক্ত হইলে কার্যকরী হইবেই ।
শরীরের অভ্যন্তরের প্রধান যন্ত্রসমূহ ক্ষয় ও ক্ষতি যেমন হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রিয়ার পথে অন্তরায় তেমনি চিকিৎসাকালে ভেষজগুনবিশিষ্ট দ্রব্যাদির ব্যবহারও ঔষধের ক্রিয়াকে ব্যাহত করে । আজকাল অধিকাংশ লোক কোন না কোন নেশার বশবর্তী । চা প্রায় সকলেই পানীয়রূপে ব্যবহার করে, অনেকে ধূমপান করিয়া থাকে ও নস্য লইয়া থাকে এবং কেহ কেহ আফিম সেবন করিয়া থাকে ।
মেয়েদের মধ্যে পানদোক্তার ব্যবহার অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় । তাহা ছাড়া কর্পূরাদিযুক্ত ঔষধ ও মালিশ, টুথপেস্ট, রাসায়নিক উপাদানে প্রস্তুত সিন্দুর, আলতা প্রভৃতি এখন নিত্য ব্যবহার্যের মধ্যে পরিগণিত । ঔষধ-গুনবিশিষ্ট এইসব উপকরণ ঔষধের ক্রিয়া প্রকাশের পথে বাধা সৃষ্টি করে বলিয়া যতদূরসম্ভব সেইগুলিকে বর্জন করিয়া চলা উচিত ।
যে সকল শিশু স্তন্যপায়ী তাহাদের চিকিৎসায় মায়ের খাদ্যাখাদ্য বিচার করিয়া চলিতে হয় এবং কোন অবাঞ্ছিত নেশা যেমন অতিরিক্ত চা, পান-দোক্তা, জর্দা প্রভৃতি খাওয়া বন্ধ না করিলে স্তন্যপায়ী শিশুদের চিকিৎসায় সুফল পাওয়া কঠিন হয় ।
কারণ শিশুর খাদ্য মাতৃদুগ্ধ যদি দুষিত হয় তাহা হইলে তাহা কখনও শিশুর কল্যাণপ্রদ ও পুষ্টিবিধায়ী হইতে পারে না । বর্তমান যুগে চিকিৎসার পথে অন্তরায় এই সকল কদভ্যাস সর্বতোভাবে বর্জন করা সম্ভব হয় না, কিছু মানিয়া লইয়াই চিকিৎসা চালাইয়া যাইতে হয় । ঐ সকল ভেষজধর্মী দ্রব্য হোমিওপ্যাথিক ঔষধের স্বল্প মাত্রার সূক্ষ্মক্রিয়াকে নষ্ট করিয়া দেয় বলিয়া চিকিৎসায় ইন্সিত ফললাভ ত্বরাম্বিত হয় না ।
প্রথমে.....
|
|
|
| |
| |
|
| বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র |
| নিম্নলিখিত রোগ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দ্বারা হোমিওপ্যাথি করা যায়: |
| ১. মাইগ্রেন |
| ২. নাকসংক্রান্ত এলার্জি |
| ৩. সাইনাসের প্রদাহ |
| ৪. টন্সিলের প্রদাহ |
| ৫. শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি |
| ৬. চুলের সমস্যা/চুল পড়া |
| Read More >> |
|
| হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। |
|
|